দেশইনফো ডেস্ক: পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং বিভিন্ন থানার ওসি পদে নিয়োগ পাওয়া অন্তত ৯৫ জন পরিদর্শককে নিয়ে গোপন প্রতিবেদন তৈরি করেছে একাধিক সংস্থা। তাদের বেশিরভাগই ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন। এরই মধ্যে তা জমা হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তালিকায় নাম আসা কর্মকর্তাদের অনেকেই ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা এখনো গোপনে বিএনপি-জামায়াতকে সহায়তা করে যাচ্ছেন। তাদের অনেকের আত্মীয়-স্বজন বর্তমানেও বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন।
প্রতিবেদনে তাদের শিক্ষাজীবন, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা-মতাদর্শ এবং তাদের আত্মীয়স্বজনের কর্মকাণ্ডের তালিকা সবিস্তারে বর্ণনা করা হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ওই কর্মকর্তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, বর্তমানে অতিমাত্রায় আওয়ামী লীগ সেজেছেন, সময়মতো খোলস বদলে আগের ভূমিকায় ফিরে যেতে পারেন এসব কর্মকর্তা।
তালিকায় যাদের নাম:
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান থানার ওসি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, ছাত্রদল নেতা হিসেবে পুলিশ বিভাগে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বিএনপি সরকারের সময় তিনি মিরপুর থানার সিভিল টিম পরিচালনা করতেন।
ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. আব্দুর রশিদ, বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। ১৯৯৩ সালে তিনি নিয়োগ পেয়েছিলন ছাত্রদল নেতা হিসেবে।
শ্যামপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বিএনপি নেত্রী হেলেন জেরিন খানের বোন জামাই।
শাহ আলী থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন,
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান,
ধানমন্ডি থানার ওসি আব্দুল লতিফ,
উত্তরা পূর্ব থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী,
আদাবর থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমান ছাত্রদল নেতা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
উত্তর খান থানার ওসি হেলালউদ্দিন মির্জা আব্বাসের ছোটভাই মির্জা খোকনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু,
সবুজবাগ থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস ফকির বিএনপি নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের আশীর্বাদপুষ্ট জেলা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন।
কদমতলী থানার ওসি আব্দুল জলিল মাগুরা জেলা ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
হাজারীবাগ থানার ওসি মীর আলিমুজ্জামান,
শ্যামপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত এ কে এম হাবিবুল ইসলাম,
বনানী থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. আব্দুল মতিনের নিয়োগও ছাত্রদল নেতা হিসেবে। আব্দুল মতিন নওগাঁ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।
মতিঝিল থানার পরিদর্শক তদন্ত গোলাম রব্বানী,
দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক তদন্ত রুকনুজ্জামানের নিয়োগ ছিলো শিবির নেতা হিসেবে।
শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক তদন্ত সোহরাব আল হোসাইন,
নরসিংদী সদর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা,
জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম, পরিদর্শক তদন্ত মো. মাহমুদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুঘটকের ভূমিকা রাখে ছাত্রদলের তৎকালীন নেতা। ওসি আমিনুল ইসলাম বর্তমানে গাজীপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ের জামাই।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতয়ালী থানার ওসি মো. জসিমউদ্দিন,
হালীশহরের ওসি মাহফুজুর রহমান,
আকবরশাহ্ থানার ওসি মো. আলমগীর,
ইপিজেডের ওসি সৈয়দ মো. আহসানুল ইসলাম,
পাহাড়তলীর ওসি মো. আলমগীর হোসেন,
চান্দগাঁও ওসি মো. আবুল বাশার, সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার মর্জু নিয়োগ পেয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা হিসেবে।
বায়েজিদ থানার ওসি মো. আবুল কালাম,
কর্ণফুলীর ওসি রফিকুল ইসলাম,
বন্দরের ওসি রফিকউল্লাহ নোয়াখালী সদরের ওসি সামাদ সরাসরি শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
আনোয়ারা থানার ওসি দুলাল মাহমুদ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে নির্যাতনকারী এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের ক্যাডার।
সেনবাগ থানার ওসি হারুন,
পেকুয়ার ওসি জহিরুল, চকরিয়ার ওসি বকতিয়ার চৌধুরী,
রামুর ওসি লিয়াকত আলী শিকদার,
উখিয়ার ওসি আবুল খায়ের,
কুমিল্লা দাউদকান্দির ওসি মিজানুর রহমান,
মুরাদনগরের ওসি মো. বদিউজ্জামান,
চান্দিনার ওসি নাসির মৃধা,
দেবিদ্বারের ওসি মিজানুর রহমান,
চৌদ্দগ্রামের ওসি আবু ফয়সল,
কুমিল্লার ওসি (ডিবি) এ কে এম মঞ্জুরুল আলম ছাত্রদল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মঞ্জুরুল আগে চট্টগ্রামে চাকরিরত অবস্থায় ইয়াবা পাচারকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বুড়িচং থানার ওসি শাহজাহান কামাল,
জোরারগঞ্জের ওসি জাহিদুর কবির,
মিরসরাইয়ের ওসি সাইরুল ইসলাম,
রাউজানের ওসি কেফায়েত উল্লাহ ফটিকছড়ির ওসি আবু ইউসুফ মিয়া,
ফেনী সদর থানার ওসি রাশেদ চৌধুরী,
হাতিয়ার ওসি কামরুজ্জামান,
পটিয়ার ওসি শেখ মো. নিয়ামউল্লাহ,
বাঁশখালী থানার ওসি আলমগীর হোসেন,
ঠাকুরগাঁও হরিপুর থানার ওসি রুহুল কুদ্দুস,
রংপুর মিঠাপুকুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির,
ঝিনাইদহ শৈলকুপা ওসি আলমগীর হোসেন,
হরিনাকুণ্ডু থানার ওসি শওকত হোসেন,
মহেশপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির,
কক্সবাজার সদরের সাবেক ওসি আসলাম হোসেন,
মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল আলম,
সিলেট শাহপরান থানার ওসি আকতার হোসেন,
হবিগঞ্জ চুনারুঘাট থানার ওসি মো, আজমিরুজ্জামান,
নবীগঞ্জ থানার ওসি আতাউর রহমান সরাসরি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।