মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে বর্বরোচিত নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যা ও উচ্ছেদ অভিযান থেকে বাচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বিশ্ব জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের এজ হিল ইউনিভার্সিটিতে হু আর দ্যা নিউ ‘ভোট পিপল?’ শিরোনামে রোহিঙ্গা বিষয়ক প্যানেল ডিসকাশন, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশী ফটো সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর তোলা ৩৫টি ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে সেখানে।
৩১ মে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এজ হিল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. জন কাটার। রোহিঙ্গা বিষয়ক মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় শুক্রবার (১ জুন)। আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী।
এজ হিল ইউনিভার্সিটির ভূগোলের প্রভাষক ও দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক স্টাডিজের সম্পাদক ড. তাসলিম শাকুরের সহযোগিতায় প্যানেল ডিসকাশনে বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্বমত জনমত গড়ে তুলতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ভাবে বড় বড় দেশগুলো মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এছাড়াও মিয়ানমারের নেত্রী অংসান সূচির নোবেল কেড়ে নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বক্তারা আরো বলেন, মিয়ানমার যা করেছে তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বড় অপরাধ। তাই তাদেরকে এর খেসারত দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালতে দাঁড় করাতে হবে মিয়ানমারকে। বিপথগামী সেনাদের বিচার করে নির্যাতিত, নিপীড়িত অসহায় রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে বিশ্ববাসীকে। অন্যথায় এই জনগোষ্ঠী জঙ্গী কার্যক্রমসহ অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়বে। তাই যতদ্রুত সম্ভব বাংলাদেশের সাথে আলোচনা করা রোহিঙ্গাদের পূনর্বাসনের ব্যাবস্থা করা দরকার।
অনুষ্ঠানে ড. তাসলিম শাকুর ও আবুল হোসেনের সম্পাদনায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
এছাড়াও ‘ইমেজিং সাউথ এশিয়ান কালচার ইন নন-ইংলিশ’ শিরোনামে এসএসিএস (সাউথ এশিয়ান কালচার স্টাডিজ) জার্নালের একটি বিশেষ সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশি/ফরাসি চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের আঁকা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সংকটের অনুরূপ চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রদর্শনী ঘুরে রোহিঙ্গাদের দু:খ-দুর্দশার ছবি দেখে রীতিমত মর্মাহত ব্রিটেনের নাগরিকরা। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের পূনবার্সনে বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানান। প্রায় বেশিরভাগ দর্শনার্থীই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার দাবি জানান এবং এই ধরণের সচেতনতা মূলক ছবি তোলায় বাংলাদেশী ফটো সাংবাদিক ফোজিত শেখ বাবুর প্রশংসা করেন।
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানে চিলির ভূগোলবিদ ড:জাওকুইন কোকো কর্টেসের বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন, ইফতার ও রাতের খাবারের মাধ্যমে গতদিনের আয়োজন শেষ হয়।