বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আলিয়া মাদ্রাসার ক্যাঙ্গারু কোর্টে সাজানো মামলায় অন্যায় ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে কুমিল্লায় দায়ের করা মিথ্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগ স্থগিত করেছেন। যা নজিরবিহীন ঘটনা।
তিনি বলেন, ন্যায় বিচার পাওয়ার মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হলো সর্বোচ্চ আদালত এবং জামিন পাওয়া মানুষের অধিকার।
সোমবার(৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
“দেশের জনপ্রিয় নেত্রীকে মহামান্য হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পর সর্বোচ্চ আদলত কর্তৃক জামিন স্থগিত করার ঘটনাটি সম্পূর্ণরুপে সরকার নির্দেশিত”
রুহুল কবির বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিঘাংসর শিকার। তাই হাইকোর্ট জামিন দিলে সে জামিন স্থগিত করা হয় এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। শেখ হাসিনা জোর করে ক্ষমতায় আছেন বলেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় ন্যায় বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এবং খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত করা শেখ হাসিনার হুকুমেরই বাস্তবায়ন।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন-বেগম জিয়া মুক্তি পেলে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের দায়ের করা ১৫টি মামলা ক্ষমতার জোরে প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনাতে কি বিচারের বাণী খুশীতে আনন্দ উল্লাস শুরু করেছিল ?
বিএনপির এই নেতা বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ আদালতকে সরকারের মুখপাত্রে পরিণত করার বন্দোবস্ত করছেন।
“ছাত্রলীগের নামের সাথে ছাত্র নামটি জুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ গোটা ছাত্র সমাজকেই অপমানিত করেছে। ভোগ, লালসা, দাপট, খুন, জখমের চেতনায় বর্তমান ছাত্রলীগকে গড়ে তোলা হয়েছে। নৈরাজ্যের বিভিষিকায় দেশ নিমজ্জিত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই রক্তে রঞ্জিত। ছাত্রীদের ওপর লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের হিড়িক এক আতঙ্কজনক মাত্রা লাভ করেছে। কোটা আন্দোলনের ছাত্র নেতা রাশেদ কোন অপরাধের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড খাটছে ? “
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর র্যাব-পুলিশের হাত কত নিরপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত তা বলে শেষ করা যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারিদের দাবির মুখে প্রায় দু’মাস আগে জাতীয় সংসদে সম্পূর্ণরুপে কোটা বাতিলের ঘোষনা দেন। আসলে সেদিনই আমরা বলেছিলাম-এই ঘোষনা একটি নাটক ও ছাত্র আন্দোলনের প্রতি প্রতারণা। এখন সেটি অক্ষরে অক্ষরে দৃশ্যমান হচ্ছে। আসলে সেদিন প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রতারণার কৌশল নিয়েছিলেন। আন্দোলনকারিদের প্রতি সরকারের আচরণে এটা আবারও প্রমানিত হলো যে, শেখ হাসিনা যাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘুঘু চরিয়ে দিতে মোটেই দ্বিধা করেন না।
“আগামী ৯ জুলাই সোমবার বিএনপি’র উদ্যোগে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আমরা ইতোমধ্যে রমনাস্থ ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ এবং মহানগর নাট্যমঞ্চে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। এই দু’টি স্থানের মধ্যে যেকোন একটিতে আমাদের প্রতীকী অনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন,আহমেদ আযম খান,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।