কোয়ার্টার ফাইনালে প্রাণপন লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় ফেল করে বিদায় নিল রাশিয়া। ডেনিশ চেরিশেভ-মারিও ফার্নান্দেজদের স্বপ্ন গুড়িয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সেমিফাইনালের টিকিট পেল ক্রোয়েশিয়া। শনিবার শোচির ফিশ্ট স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে রুশদের ৪-৩ গোলে হারায় মডরিচ-রাকিতিচরা।
এদিন সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে রাশিয়া। শুরু থেকে মাঝমাঠের দখল নিয়ে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে ক্রোয়েশিয়া। সেখানে উইং দিয়ে একই কাজটা করে যায় রাশিয়া। তবে প্রথম সুযোগ পায় ক্রোয়াটরা। ১৮ মিনিটে ডি বক্সের একেবারে সামনে ফ্রি কিক পায় তারা। কিন্তু তা থেকে গোল আদায় করতে পারেননি ইভান রাকিতিচ।
পরে আক্রমণের গতি বাড়ায় রাশিয়া। ফলে সাফল্যও পায় স্বাগতিকরা। ৩১ মিনিটে বুলেটগতির দূরপাল্লার শটে জালে জড়ান ডেনিশ চেরিশেভ। এতে স্কোরলাইন হয় রাশিয়া ১-০ ক্রোয়েশিয়া। এটি এ গোলমেশিনের এবারের বিশ্বকাপে চতুর্থ গোল।
পিছিয়ে পড়ে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। একের পর এক আক্রমণ করেন মড্রিচরা। তাদের প্রচেষ্টা আলোর মুখও দেখে। ৩৯ মিনিটে মারিও মানজুকিচের অসাধারণ কাটব্যাক থেকে দুর্দান্ত হেডে নিশানাভেদ করেন আন্দ্রেজ ক্রামারিচ। ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক সুভাসিচ ঝাপিয়ে বলের লাইনে যাওয়ার সুযোগই পান নি। তাকিয়ে শুধু বল জালে জড়িয়ে যাওয়া দেখিয়েছেন তিনি।
তবে স্বাগতিকদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মাত্র আট মিনিট ব্যবধানে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। মানজুকিচের গোলের কোনা থেকে দারুণ ক্রসে হেড দিয়ে সমতায় ফেরে ক্রোয়াটরা। এই গোলেই ১-১ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে কোন দলই গোল করতে না পারায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। এখানে জমে উঠে খেলা। ১০০ মিনিটে ঠিকানায় বল পাঠিয়ে ক্রোয়েশিয়াকে লিড এনে দেন দোমাগোজ ভিদা। ব্যাকফুটে চলে গিয়ে ঝটিকা অভিযান চালায় রাশিয়া। গোলের দেখাও পায় তারা। ১১৫ মিনিটে দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করে রুশ সমর্থকদের উল্লাসে ফাটান মারিও ফার্নান্দেজ। ফলে ম্যাচ নিষ্পত্তির জন্য দ্বারস্থ হতে হয় টাইব্রেকার নামক ভাগ্যের।
টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়া গোলরক্ষক সুভাসিচ প্রথম শঠটাই ফিরিয়ে দেন। ক্রোয়েশিয়ার কোভাসিচ আবার দ্বিতীয় শটটি মিস করেন। আর রাশিয়া তিন নম্বর শটটি বাইরে মারলে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৪-৩ গোলে ধরাশায়ী হয় রাশিয়া। এতে প্রথমবারের মতো ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের সেমিতে খেলার স্বপ্নের সলিলসমাধি ঘটে রুশদের। আর ১৯৯৮ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো সেমিফাইনালে উঠে ক্রোয়েশিয়া।