হুমায়ূন কবীর ঢালী: যখন জানতে পারি, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কেউ একজন সৃজনশীল মানুষ, লেখক হিসেবে তখন গর্ব হয়। শ্রদ্ধা ও সম্মানে মাথা নত হয়। বলছিলাম আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা। তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, একাধারে একজন লেখক, চিত্রশিল্পী এবং ফটোগ্রাফার। তাঁর লেখালেখির সাথে পরিচয় বেশ আগে হলেও, সম্প্রতি পরিচয় হলো তাঁর আঁকা অসাধারণ চিত্রকর্ম ও অতি সম্প্রতি ক্যামেরা হাতে একজন ফটোগ্রাফার হিসেবেও।
লেখক হিসেবে শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার অনেক আগেই। তাঁর লেখা প্রকাশিত বই রয়েছে একাধিক। ‘ওরা টোকাই কেন’ পড়েছি নব্বই দশকের শুরুতেই। তাঁর লেখা সাবলিল, তথ্যবহুল এবং সমাজ সচেতনমূলক।
আগামী প্রকাশনী ও মাওলা ব্রাদার্স থেকে তাঁর অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর বইয়ের তালিকা একেবারে ছোট নয়।
১) Who is the father of my son (1972)
২) ওরা টোকাই কেন? (1987)
৩) বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম (1993)
৪) দারিদ্র বিমোচন, কিছু ভাবনা (1993)
৫) আমার স্বপ্ন, আমার সংগ্রাম (1996)
৬) People and democracy (1997)
৭) আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি (1998)
৮) বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন (1999)
৯) Development of the masses (1999)
১০) সামরিক তন্ত্র বনাম গণতন্ত্র (1999)
১১) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন (2001)
১২) বিপন্ন গণতন্ত্র, লাঞ্ছিত মানবতা (2002)
১৩) Democracy in distress, demeaned humanity (2003)
১৪) সহেনা মানবতার অবমাননা (2003)
১৫) Living with tears
শেখ হাসিনা রচিত ও সম্পাদিত এসব বইয়ের ১০ টির নতুন সংস্করণ ২০১৫ একুশে বইমেলায় আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো হলো: সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ: কিছু চিন্তাভাবনা, সহে না মানবতার অবমাননা, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা, লিভিং ইন টিয়ারস, পিপল এ্যান্ড ডেমোক্রেসি, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি (জাতীয় সংসদে প্রদত্ত ভাষণ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বেবি মওদুদের সাথে যৌথ সম্পাদনা)। এছাড়া তাঁর রচনাসমগ্রও বেরিয়েছে মাওলা ব্রাদার্স থেকে।
চিত্রশিল্পী হিসেবেও তাই। তবে চিত্রশিল্পীর পরিচয় ঘটে অনেক পরে। তখন তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন। তাঁর চিত্রকর্মটি দেখে আমি মুগ্ধ ও অভিভূত। চিত্রকর্মটি প্রথম জনসমক্ষে (ফেসবুকের মাধ্যমে) প্রকাশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকনকে ধন্যবাদ। জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে ছবিটি এঁকেছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবিতে দেখা যায় নদীর তীর, আকাশে মেঘ, প্রান্তরে সবুজ, নৌকা বাঁধা ঘাট, কাছেই লোকালয়, দু-চার জন মানুষের আনাগোনা। গ্রাম বাংলার চিরচেনা এ দৃশ্যকে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ধারণ করেন মনে প্রাণে সেভাবেই যত্নের আঁকড়ে তুলে ধরেছেন ক্যানভাসে। এই কর্মটি দেখলে একজন জাত শিল্পীর অবয়ব ফুটে ওঠে চোখের সামনে।
পত্রিকার খবরে জানতে পেরেছি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এই চিত্রকর্মটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন ২০০৪ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার বাড়ি থেকে। সেখানে ড্রয়িং রুমে শোভা পাচ্ছে এই গ্রামবাংলার চিত্রকর্মটি। এটি ছাড়াও নিশ্চয়ই তাঁর আরও চিত্রকর্ম রয়েছে আশা করি। সেগুলোও দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করছি এই লেখায়।
সম্প্রতি দেখলাম ফটোগ্রাফার শেখ হাসিনাকে। রন্ধনশিল্পী হিসেবেও তাঁর পরিচয় পেয়েছি আমরা। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় রান্নাকরা মুহূর্তের ছবিও দেখেছি। এটাও নিঃসন্দেহে একটি সৃজনশীল কর্ম।
একজন তুখোড় রাজনীতিক এবং রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি তাঁর এহেন সৃজনশীল কর্ম অবশ্যই আমাদের অভিভূত ও মুগ্ধ করে বৈকি। সৃজনশীল শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন।