বিশ্বকবির মহাপ্রয়াণ দিবস আজ

0
211
আজ বাইশে শ্রাবণ। বাঙালির প্রাণের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম মহাপ্রয়াণ দিবস। বাংলা সাহিত্যের এই প্রাণপুরুষ ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ পরলোকগমন করেন।
বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশে যার অফুরন্ত অবদান সেই কবিগুরু ভক্তদের যেদিন না-ফেরার দেশে যাত্রা করেন সেদিন শোকার্ত বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে লিখেছিলেন- ‘দুপুরের রবি পড়িয়াছে ঢলে অস্তপারে কোলে/বাংলার কবি শ্যাম বাংলার হৃদয়ের ছবি তুমি চলে যাবে বলে/শ্রাবণের মেঘ ছুটে এলো দলে দলে।’
বহু বছর আগে পৃথিবী ছেড়ে না-ফেরার দেশে চলে গেলেও অসামান্য রচনা ও সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে আজো বেঁচে আছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি এখনো দুই বাংলার মানুষের প্রেরণার এক অন্তহীন উৎস। কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ
করা রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে। ১৯১৩ সালে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসেবে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল এনেছিলেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, চিত্রশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, ছোট গল্পকার ও ভাষাবিদ। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন কোনো দিক নেই যেখানে এই কীর্তিমানের ছোঁয়া পড়েনি। আশি বছরের জীবন সাধনায় বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে বিশেষ মর্যাদার আসনে আসীন করে গেছেন তিনি।
কবিতা দিয়ে সাহিত্যচর্চার শুরু এবং শেষ হলেও তার হাতেই বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক ছোট গল্পের সৃষ্টি হয়েছে। তিনিই আবার বাংলা উপন্যাসকে আধুনিক রূপ দেন। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনা নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাষ্ট্র নিয়ে তার ভাবনাও তাকে সম্মানের আসনে পেঁৗছে দিয়েছে। মানুষের মুক্তির দর্শন ছিল তার চেতনাজুড়ে।
রবীন্দ্রনাথই একমাত্র কবি যিনি দুটি দেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তার রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দেওয়া হয়। তারই ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ গানটি ভারতের জাতীয় সংগীত।
মহাপ্রয়াণ দিবসে আজ দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাভাষীরা বিশ্বকবিকে স্মরণ করছে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায়। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে নানান আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here