মিরপুর টেস্টে তৃতীয় দিন সকালেও ব্যাটিং বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের
উইকেট থেকে দারুণ সহায়তা পাচ্ছেন স্পিনাররা। বল ভীষণ টার্ন এবং স্কিড করছে। কখনও লাফিয়ে উঠছে এবং নিচু হয়ে যাচ্ছে। এর পুরো ফায়দা লুটলেন মেহেদী হাসান মিরাজ-সাকিব আল হাসান।
তাদের বল পড়তেই পারলেন না সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। বলির পাঁঠা হয়ে একে একে ফিরে গেলেন তারা। সবশেষে যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেন শারমন লইস। তাকে এলবিডব্লিউ করে ফেরালেন সাকিব। এতে ১১১ রানে অল আউট।
আগের দিন শেষ সেশনে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন মিরাজ। আজ হেটমায়ারকে ফেরানোর পর আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের পরের ওভারে তুলে নেন দেবেন্দ্র বিশুকে। এই আউটের প্রধান কুশীলব অবশ্য সাদমান ইসলাম। সিলি পয়েন্টে বিশুর দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তিনি। পরের ওভারে সাকিবের বলে ‘জীবন’ পেলেও মিরাজকে তা ‘উপহার’ দিয়ে গেছেন কেমার রোচ। অযথাই তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন এই পেসার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোট ৭ উইকেট নিয়ে টেস্টে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার তুলে নিয়েছেন মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১১০। হাতে ১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে ৪০২ রানে পিছিয়ে আছে দলটি।
মিরপুর টেস্টে দিন পাল্টালেও পতনের মিছিল ঠেকাতে পারছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাল ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল সফরকারি দল। আজ তৃতীয় দিনের খেলা শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়েছে তাঁরা। এই ৪টি উইকেটই নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সব মিলিয়ে টেস্টে এক ইনিংসে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার তুলে নিয়েছেন এই স্পিনার। তাঁর ঘূর্ণিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে ফলোঅনে পড়তে যাচ্ছে তা মোটামুটি নিশ্চিত।
কাল ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অপরাজিত ছিলেন শেন ডওরিচ ও ডেনজা হেটমায়ার। আজ সকালের সেশনে দ্বিতীয় ওভারেই মিরাজকে ছক্কা মেরে অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হেটমায়ার। নিজের পরের ওভারেই হেটমায়ারকে তালুবন্দী করে শোধটা তুলে নেন মিরাজ। ঠিক তার আগের বলেই মিরাজের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে হুক-আই প্রযুক্তিতে দেখা গেছে বল উইকেটে আঘাত করত।
ফলোঅনের শঙ্কা নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলোঅন এড়াতে নতুন দিনে দরকার ছিল ২৩৩ রান। আগের দিনের ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন খেলতে নামে সফরকারীরা। শিমরন হেটমায়ার ৩২ ও শান ডাওরিচ ১৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করেন। স্বাভাবিকভাবেই তাদের দিকে তাকিয়ে ছিল তারা।
তবে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি এ জুটি।শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজের কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন হেটমায়ার। ফেরার আগে ৫৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ রান করেন তিনি। সেই রেস না কাটতেই দেবেন্দ্র বিশুকে সাদমান ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মিরাজ। এ নিয়ে ৫ উইকেটে কোটা পূরণ করেন তিনি।
এতেই ক্ষ্যান্ত হননি মিরাজ। পরক্ষণেই লিটন দাসে তালুবন্দি করে দেবেন্দ্র বিশুকে ফেরান এ অফস্পিনার। সবাই নিয়মিত বিরতিতে যাওয়া-আসা করলেও একপ্রান্ত আঁকড়ে ছিলেন ডাওরিচ। অবশেষে তাকেও উপড়ে ফেলেন তিনি। নির্ভরযোগ্য এ ব্যাটসম্যানকে ফেরান এলবিডব্লিউ ফাঁদে ফেলে। এটি তার ক্যারিয়াসেরা বোলিং।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫৪ ওভারে ৫০৮ (সাদমান ৭৬, সৌম্য ১৯, মুমিনুল ২৯, মিথুন ২৯, সাকিব ৮০, মুশফিক ১৪, মাহমুদউল্লাহ ১৩৬, লিটন ৫৪, মিরাজ ১৮, তাইজুল ২৬, নাঈম ১২*; বিশু ২/১০৯, রোচ ২/৬১, ওয়ারিক্যান ২/৯১, চেজ ১/১১১, লুইস ১/৬৯