একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হলফনামা থেকে তথ্যে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নিজস্ব কোনো বাড়ি বা এপার্টমেন্ট নেই। তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে- উত্তরায় অর্জনকালীন সময়ের ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি এবং পৈতিৃক সম্পত্তি হিসেবে ৬০ শতাংশ অকৃষি জমি। স্ত্রীর অর্জনকালীন সময়ের ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে।
তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫
মামলার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন- বর্তমানে তার নামে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। অতীতে ১২টি মামলা দায়ের হয়েছিল। অব্যাহতিমূলে ৯টি নিষ্পত্তি এবং ৩টিতে খালাস পেয়েছেন।
পেশা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, বেসরকারি চাকরি (বর্তমানে এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে বেতন ভাতা পাই এবং বই ও পত্র পত্রিকায় লিখে আয় করি)।
আয়ের স্থানে তিনি উল্লেখ করেছেন- বাড়িভাড়া/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বছরে আয় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার, পেশা (শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ইত্যাদি) ১২ লাখ ৬০ হাজার, বই লিখে আয় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫১টাকা। ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫১টাকা। মাসিক গড় আয় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮০৪ টাকা ২৫ পয়সা।
স্ত্রীর আয়ের স্থানে তিনি উল্লেখ করেছেন- বাড়িভাড়া/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বছরে আয় ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৩৬টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৬০টাকা, পেশার স্থানে লেখা আছে প্রযোজ্য নয়, অন্যান্য আয় দেখিয়েছেন- ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৫১৯ টাকা।
স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে- স্ত্রীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২৬ লাখ ৩৪হাজার ৬১১ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয় পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৫৫ লাখ ৯ হাজার ৮৪৫টাকা, ব্যক্তিগত কোনো গাড়ি নেই। ১ লাখ টাকা মূল্যের ২০ তোলা স্বর্ণ আছে। ১২ হাজার টাকার (টিএন্ডটি ও মোবাইল) আছে। আছে ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নিজের নগদ টাকা আছে ৫৫ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৮৩ লাখ ৫৮হাজার ৭৪২ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয় পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ১ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ২৭৮টাকা। বাস, ট্রাক, মটর গাড়ি ও মটর সাইকেল ইত্যাদি বিবরণী (পরিমাণ, অর্জনকালীন সময়ের মূল্যসহ) ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ২৫ তোলা স্বর্ণ আছে।
তিনি উপহারে পাওয়া মোবাইল ব্যবহার করেন। নিজের নামে ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে।
কাদেরর হলফনামায় যা আছে
পিতা-মৃত মোশারফ হোসেন, মাতা-ফজিলাতুন্নেছা, ঠিকানা- মোশারফ হোসেন বাড়ি, গ্রাম-বড় রাজপুর, ১নং ওয়ার্ড, বসুরহাট পৌরসভা, ডাকঘর-বসুরহাট, উপজেলা-কোম্পানীগঞ্জ, জেলা- নোয়াখালী।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের রাজনীতি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের রাজনীতি। আমরা মানুষের মাঝে আছি। তাই ক্ষমতায় না থাকলেও পালিয়ে যাব না। আমাদের এ দেশেই জন্ম, এ দেশেই আমরা মরব। যে শপথ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সকালে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বথা বলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে ভোরবেলায় যখন কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কেউ জানত না। বঙ্গবন্ধু জেলখানা থেকে বাইরে পা দিয়ে কুয়াশা ভেজা সকালে একখণ্ড মাটি কপালে ছুঁয়ে বলেছিলেন, এই দেশেতে জন্ম আমার যেন এই দেশেতেই মরি।
তিনি আরও বলেন, আমরাও এই মাটির সঙ্গেই আছি। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনাও আছেন।