নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পাওনা টাকা চাওয়ায় সুমন (৩৫) নামের এক ঝুট ব্যবসায়ীকে আগুন দিয়ে পুঁড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে সুমনের গায়ে আগুন দেয়ার পর আজ শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত সুমন সদর উপজেলার পশ্চিম মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।
নিহত সুমনের পরিবারের স্বজনরা জানান, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী বিপ্লব ও সোহেল মন্ডল গত কয়েক মাস আগে সুমনের কাছ থেকে সত্তর হাজার করে দুইজনে এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা ধার নেয়। এক মাস পরে এ টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তারা সুমনকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় বিপ্লব টাকা দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে তাদের বাসায় ডেকে নেয়। সুমন সেখানে যাওয়ার পর বিপ্লবের স্ত্রী শায়লা, সোহেল মন্ডল, হোটেল মাসুদ মিলে সুমনকে জাপটে ধরে রাখে। এরপর বিপ্লব সুমনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সুমনের আর্ত চিৎকারে এলাকাবাসি এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহরের খানপুরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ৩ শ’ শয্যা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সুমন সেখানে আগুনে পোড়ানোর পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। হত্যাকারিদের নাম বলে যায়। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে ঝলসে গেছে। ভোর পাঁচটায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমনের মৃত্যু হয়। (মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা মৃত্যুর আগে সুমনের দেয়া জবানবন্দি আছে)।
ভক্সপপ: নিহত সুমনের দুই বোন, মা ও স্ত্রী।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বিপ্লব, তার স্ত্রী শায়লা, সোহেল মন্ডল ও হোটেল মাসুদ পলাতক রয়েছে। পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী সোমা আক্তার। সুমন ঝুটের ব্যবসা করতো। তার স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা। সিয়াম নামের আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে তাদের। চার ভাই বোনের মধ্যে সুমন ছিল সবার বড়। দুপুর তিনটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত সুমনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। লাশ দাফনের পর এ ব্যাপারে মামলা করবেন বলে জানান পরিবারের স্বজনরা।
ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঞ্জুর কাদের মুঠোফোনে জানান, এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।