এএসএম মঈনউদ্দিন: আজকের আজাদি পত্রিকার রোহিঙ্গা বিষয়ক লীড নিউজে চোখ আটকে গেলো, অজানা এক আশংকায় বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। আমি চট্টগ্রামের বাসিন্দা, চট্টগ্রাম আমার গর্ব এই বিভাগের প্রতি ইঞ্চি জায়গা ঐতিহ্য ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করে।এ চট্টগ্রামের ভাগ কোন গোষ্ঠীর কাছে যাবে না।
সংবাদের মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিলো রোহিঙ্গা ইস্যু। এ রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমি প্রথম থেকে বিরোধিতা করে এসেছি আজও করছি, আমার আগের পোস্টগুলোতেও এই সন্ত্রাসী জনগোষ্ঠীর কথা লিখেছি।
এই জনগোষ্ঠী যখন মায়ানমার সামরিক বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে আমাদের দেশে ঢুকছিলো তখন তাদের এজেন্টরা এদেশে সে সকল ভায়োলেন্সের খবর ছড়িয়ে দিয়েছিল মানবিক দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এবং তারা সেই সুযোগটা ভালো মত পেয়েছে।
রাখাইন জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে প্রবেশের পরপর বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক মহল মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। সামরিক বাহিনী, পুলিশ, সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, এনজিওসহ সবাই একযোগে কাজ করে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে।
শুধু মায়ানমারের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক গণহত্যার সময় শুধু রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তা নয়, তার আগেও প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলো যাহা স্থানীয় সূত্র দ্বারা নিশ্চিত। এসব রোহিঙ্গারা কোথায়?
কুতুপালং অভিবাসী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে এনজিও এবং বেসরকারি সংস্থার উপস্থিতি ছিলো আশংকাজনকভাবে বেশি যেটা সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা সবার চোখের সামনে মানবিক ও ধর্মীয় পরিচয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে, পাশাপাশি সংগঠিত হয়েছে।
ফুটেজ খাওয়া রাজনৈতিক মহল ও সুবিধাবাদী মানব পাচারকারীরা লাভবান হলেও দেশ এক অনিশ্চিত ভাবনায় ঢুবে গেছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুধু মুসলিম ধর্ম ও মুসলমান শব্দটির অতিরিক্ত ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষকে এত পরিমাণ আবেগ আপ্লুত করেছে যে, যে ব্যক্তি নিজে একবেলা বাজার করে খাওয়া-দাওয়া করতে আলসেমি করে সে কিনা নিজের পিঠে বালির বস্তা তুলে রোহিঙ্গাদের জন্য মসজিদ নির্মাণ করেছে। নিজের ঘরের চাল ডাল স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে তুলে দিয়েছে। আজকে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, রোহিঙ্গারা এখন কি করছে?
আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে ভূরাজনৈতিক চাপে ফেলতে চির বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ও চীন এক মিনিটও ভাবেনি, তারা স্পষ্ট মায়ানমার সরকারের পক্ষ নিয়েছে। সেখানেও আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
মাদার অব হিউম্যানিটি লাইনটির চমর মূল্য দেয়ার জন্য দেশ আস্তে আস্তে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ছুরির নিচে যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
আমরা চাইনা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নামটা যেন কোনদিন মাদার অব ডোমেস্টিক ক্রাইসিস হোক, তিনি যে চাপ সহ্য করে মানবতার হাত প্রসারিত করেছেন সে হাতকে আমরা শক্তিশালী করে মানবতার মুখোশে জন্ম নেয়া সন্ত্রাসী নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করবো। এজন্য দেশের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আন্তর্জাতিক মহলে এ বোঝা অপসারণের জন্য আপনি চাপ দিন আমাদের দেশ সন্ত্রাসী মুক্ত করুন।
রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেশে এদের কন্ট্রোল করা দিন দিন দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে, এরা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি, খুন, হিউম্যান ট্রাফিকিং, মাদকদ্রব্য পাচারে শক্ত সিন্ডিকেটে আবির্ভাব নিচ্ছে।
এদিকে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর সাথে ভূমি জটিলতা ও তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক খুন পাহাড়কে অশান্ত করে রেখেছে, তাদের সাথে যদি রোহিঙ্গারা একাত্ম হয়ে বিশাল কোন নতুন গোষ্ঠী তৈরি করে তাহলে দেশের সার্বভৌমত্বের কপালে নতুন দুর্যোগ তৈরি হবে। তাই এখনি প্রয়োজন তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও সন্ত্রাসী মনোভাবকে কন্ট্রোল করার। প্রয়োজনে বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী অপরাধী রোহিঙ্গাদের দ্রুত বিচার কার্যকর করা উচিৎ।
এই সন্ত্রাসী জনগোষ্ঠী পরাধীন এরা যা ইচ্ছে তা করার স্বাধীনতা চাইতে পারে না। এদের অপরাধের ব্যাপ্তি বলে দিচ্ছে এরা দেশে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করার জন্য কোন পরাশক্তির দ্বারা প্রভাবিত।
রোহিঙ্গা শিবিরে সকল প্রকার এনজিও, বিদেশী নাগরিকের চলাচল ও কার্যক্রমে কড়াকড়ি আরোপ করা হোক, কোন রাষ্ট্র যদি তাদের জন্য বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সেই দেশে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেয়া হোক। সকল প্রকার ত্রাণ সহযোগিতা নিয়ন্ত্রণ করা হোক। ওরা খেয়ে এখন লোকাল বাজারে বিক্রি করছে।
তথাকথিত মানবতার চাইতে আমার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা আগে।