ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

0
227

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে নতুন যুক্ত হওয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন।

বুধবার দুপুর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ‘আকাশবীণা’র বাণিজ্যিক কার্য্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বিমানটি প্রথম ফ্লাইট নিয়ে আজই ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে যে উন্নয়ন করা যায়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

গত ১৯ আগষ্ট যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় বিমানটিকে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই যাত্রীবাহী বিমানের নাম রেখেছেন ‘আকাশবীণা’।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। সেই চুক্তির আওতায় ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ছয়টি বিমান। বাকি চারটি বিমান হলো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রীমলাইনার। এর প্রথমটি বিমান বহরে যুক্ত হলো। বাকী তিনটি বিমানের একটি এ বছর নবেম্বরে এবং সর্বশেষ দুটি আসবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে।’

এই অত্যাধুনিক উড়োজাহাজের আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরমদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দু’পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা। একইসঙ্গে জানালার বোতাম টিপে আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। জানালা ছাড়াও কেবিনেও রয়েছে মুড লাইট সিস্টেম।

জানাগেছে, টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই ড্রীমলাইনার চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগে। এটি ঘণ্টায় ৬৫০ মাইল বেগে উড়তে সক্ষম। বিমানটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই)। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হবে ইলেক্ট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এই বিমান ওজনে হালকা। ভূমি থেকে বিমানটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দু’টি পাখার আয়তন ১৯৭ফুট। এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যস্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে। প্রতিটি আসনের সামনে প্যানাসনিকের এলইডি এস-মনিটর রয়েছে। যাত্রা পথে সরাসরি ৯টি টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। অত্যাধুনিক এই বিমানে যাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। এছাড়া আকাশে উড্ডয়নের সময় ফোনও করতে পারবেন যাত্রীরা।

ড্রীমলাইনার আকাশবীণা যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫টিতে। নতুন যুক্ত হওয়া এই উড়োজাহাজটি প্রাথমিকভাবে ঢাকা-সিঙ্গাপুর ও ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে চলাচল করবে।

বিমান বাংলাদেশে নতুন এই বিমান যুক্ত হওয়ায় নতুন একটি মাইল ফলক স্পর্শ করলো বাংলাদেশ। তবে দুর্নীতি, অব্যাবস্থাপনা ও মাত্রাতিরিক্ত জনবলের কারণে, জাতীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটি বছরের পর বছরে আর্থিক ভাবে শুধু ক্ষতিগ্রস্তই হয়েছে। গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে কখনই লাভের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ বিমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here