স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: যুক্তরাষ্ট্রে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে ২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের বাড়ি ক্রয়, অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সোমবার (১ অক্টোবর) এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের পরপরই দুই সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের টিমকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার দিয়ে তিন তলা বাড়ি ক্রয়, অর্থ পাচার ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে এ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির একটি সম্পৃক্ততা থাকতে পারে- এমন অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের ৬ ব্যাংক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
গত ৬ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুই ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষযে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসময় তাদের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।
আইনজীবীরা বলেন, এস কে সিনহার উত্তরার ৬ তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরুর দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্ত্রি রায় ৬ কোটি টাকায় ক্রয় করেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্ত্রি রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা (চাচা শশুর)। আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু।
তারা বলেন, বাড়ি কিনতে বাকি ৪ কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে নিরঞ্জন ও শাহজাহান ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্ত্রি রায় জামিনদার হন। জামিনদার হিসেবে টাঙ্গাইল ও ঢাকারআশপাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন শান্ত্রি।
তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালি ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে চার কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পে-অর্ডারের পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্ত্রি রায়কে বুঝিয়ে দেন।
ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ ও পে-অর্ডারে এক ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ব্যাংক হিসাবে চার কোটি টাকা জমা দেওয়ার অভিযোগে ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এমআই/