তফসিলের তারিখ নিয়ে কাদেরের সঙ্গে কথা হয়নি: ইসি

0
266


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নির্বাচন কমিশনের ( ইসি) সঙ্গে আলাপ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের তারিখ বিষয়ে কথা বলেন নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।

সোমবার (১ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তফসিল নিয়ে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিতা খানম বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কমিশন তার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বিষয় মাথায় রেখেই তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবে। এটা নির্বাচন কমিশনই ঘোষণা করবে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়ে এটা বলা হয়েছে কি না আমি এটা আমার জানা নাই। এ ধরণের কোনো আলোচনা যেহেতু নির্বাচন কমিশনে হয় নাই। কারণ নির্বাচন কমিশনের একটা সভার মাধ্যমেই কিন্তু তফসিল ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করা হয়। তখন প্রেসেও মিটিংয়ের পরেই আমরা ঘোষণা করে দেই। সেটা যখন
এখন পর্যন্ত হয় নাই। আমি এই টুকু বলতে পারি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে বলা হয়েছে বলে আমি মনে করি না।

মন্ত্রীর এটা বলা উচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে যেতে চাই না। শুধু আমি বলতে চাই কত তারিখে তফসিল ঘোষণা হবে এই তারিখটা নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে।

রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সড়ক পরবিহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে তোপের মুখে পড়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‌নির্বাচন হতে পারে আগামী২৭ ডিসেম্বর। সেই  হিসেবে ২৫ সেপ্টেম্বরের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হতে পারে।’

অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছিলেন, “অর্থমন্ত্রী ভুল করেছেন। আমাদের সাথে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। উনার এ কথা বলা উচিৎ হয়নি।”

তারিখ ঘোষণা করা বিধির লঙ্ঘন কি না জানতে চাইলে কবিতা খানম বলেন, এখনও তফসিল ঘোষণা হয়নি। তফসিল ঘোষণার পরেই কমিশন, আচরণ বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, সেই বিষয়টা দেখবে। তার আগে দেখবে না।

আগামী সংসদ নির্বাচনটা হবে সংসদ বহাল থাকা অবস্থায়। সংসদ সদস্যরা পদে থেকে নির্বাচন করবেন। এ ক্ষেত্রে তারা সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণার বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি যতদূর জানি নির্বাচনি আচরণবিধিমালাতে একটা বিধি আছে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কথা বলা আছে। গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি কে কে সেটারও কিন্তু সংজ্ঞা আছে। সংজ্ঞার মধ্যে এমপি, মন্ত্রী, স্পিকার সবার কথাই বলা আছে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকার যানবাহন, সরকারি কোনো সুবিধা গ্রহণ
করে কোনো নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করবে না। করার সুযোগ পাবে না। এটা কিন্তু অলরেডি আচরণ বিধিমালায় আছে। সুতরাং এটা নতুন করে কিছু করার আছে বলে আমার মনে হয় না।

তিনি বলেন, তলফিল ঘোষণার পরে আমরা দেখবো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যে সংসদ সদস্য বা গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর সংজ্ঞার মধ্যে আছেন। সেক্ষেত্রে যদি বিধি বহির্ভূতভাবে কিছু করা হয়, তখনতো সেখানে অ্যাকশন নেওয়ার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের থাকবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, আপাতত আমরা যতটুক দেখেছি তাতে আচরণ বিধিতে সেরকম কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তবে আমরা আরও দেখছি।

যদি পরিবর্তন আসে তাহলে কি এই আচরণ বিধিমালা দিয়েই সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি সংসদ বিদ্যমান থাকে সেক্ষেত্রে যেহেতু একটা বিধি বর্তমানে আছে। সুতরাং আর অন্যকিছুতে হাত দেওয়ার মতো এখনো দেখি নাই। তারপরও আইন সংস্কার কমিটির আরও যারা আছেন তাদেরকে বলেছি দেখেন যে, আরো কোনো কিছু পরিবর্তন আনার প্রয়োজন আছে কি না।

রাজনৈতিক দলগুলো বারবার বলছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমান আইনে সংবিধান অনুযায়ী আপনাদেরকে নির্বাচনটা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনারা বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নিবেন কি না যেমন সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ
মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচনের কমিশনের অধীনে আনার প্রস্তাবনা। এ ধরণের বাড়তি কোনো কিছু আপনারা করবেন কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিমনার বলেন, এখন পর্যন্ত কমিশনের আলোচনার মধ্যে এ ধরণের কোনো বিষয় আসে নাই।

নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারের পাশাপাশি বদলীর সুপারিশ করার বিষয়ে তিনি বলেন, আরপিওতে আগে শুধু প্রত্যাহার করার বিষয়টি ছিল। সেখানে প্রত্যাহারের পাশাপাশি বদলী করার বিষয়টি
আমরা প্রস্তাব করেছি। বদলী এবং প্রত্যাহার দুটোই যেনো থাকে। আমরা এ সুপারিশ করেছি। এতে জবাবদিহিতা আরও বাড়বে।

ইভিএম প্রসঙ্গে কবিতা খানম বলেন, ইভিএম আমাদের সবসময় লাগছে। সংসদ নির্বাচন আছে, সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আছে। আমরা পরিসর বাড়াবো কি না। যদি দেখি আমাদের আস্থার জায়গাটা তৈরি হয়েছে। এখন ব্যাপার হচ্ছে আস্থার বিষয়টা। ইভিএম মেশিনটা যত ব্যবহার হবে তত ইম্প্রুত হতে থাকবে।

আরপিওতে ১০ থেকে ১২টি সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে কবিতা খানম বলেন, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া। ঋণ খেলাপীদের সাতদিন আগে যেটা ছিল, এখন সেটা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে।’

ইভিএম আইনি স্বীকৃতি পেলে ম্যানুয়েলে আইনের অপব্যবহারের ফলে যে শাস্তির বিধান ছিল, ইভিএমের ক্ষেত্রেও তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here