Home লিড ১ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য
দেশইনফো প্রতিবেদক: দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, তাদের জীবনমান উন্নত ও তাদের সুন্দর জীবন উপহার দেয়াই আমাদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গঠনের পর থেকেই মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের লক্ষ্যই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা যেন অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। বাংলাদেশ তখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন ছিল। সাক্ষরতার হার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে তৈরি করেছিলাম।
‘কিন্তু ২০০১ সালে আমরা বেশি ভোট পেয়েও কোনো একটি চক্রান্তের কারণে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। সাত বছর মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে যায়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালে ফের সরকারের ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আমরা ক্ষমতায় এসে মানুষের জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় তিনি দিয়ে গেছেন। জাতির যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, শুধু বর্তমানে যারা আছেন তারাই নন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম বা আগামী প্রজন্ম যাতে উন্নত জীবন পায়, সেই পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না, ভিক্ষা করে চলবে না।
‘নিজের শ্রম দিয়ে, মেধা দিয়ে এ দেশকে গড়ে তুলবে, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে— জাতির পিতা এটিই সবসময় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ভিক্ষুক জাতি হিসেবে নয়, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে চলেছি।
তিনি বলেন, আমরা ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। উন্নত শিক্ষাগ্রহণ করে তারা যেন দেশে ও বিদেশে সুনাম অর্জন করতে পারে, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
এবারের এই মেলায় ৩৬৬টি স্টল রয়েছে।
দেশের উন্নয়নের চিত্র দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে সারাদেশে চলছে উন্নয়ন মেলা। গত ১২ বছরের অগ্রগতি ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে রাজধানীর জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে বসেছে এই মেলা।মেলা তদারকির জন্য ৬৪ জেলার ৪৬ জন সচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সরকারের সাফল্য ও দর্শন তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া মেলায় সরকারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আলোচনা হবে।।
মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল থাকবে। মেলায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থা এসব স্টল স্থাপন করেছে। এছাড়াও মেলায় বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা তাদের জেলাকে ব্র্যান্ডিং করবেন। তারা তাদের জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এবং পর্যটন ও বিনিয়োগ সুবিধার বিষয় তারা তুলে ধরবেন।
মেলার তিনদিনে তিনটি সেমিনার হবে। প্রথমদিন বিকাল ৫টায় হবে ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার।দ্বিতীয় দিনের সেমিনারটিও হবে একই সময়ে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ শিরোনামে।শেষ দিনে রয়েছে ‘শিক্ষিত জাতি সমৃদ্ধ দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার।
মেলায় সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান, দপ্তর কিছু ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ সেবা দেবে। যেমন বিআরটিএ গাড়ীর নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন সেবা দেবে।পাসপোর্ট অধিদপ্তর মেলায় সরাসরি পাসেপোর্ট আবেদন গ্রহণ এবং পাসপোর্ট ফি গ্রহণ করবে। এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের স্টলে ২০১৯ সালে হজে যেতে ইচ্ছুকরা নিবন্ধন করতে পারবেন।
এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গনে বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।