বিএনপিকে ‘শয়তানের সংসার’ ছাড়ার আহ্বান হাছান মাহমুদের

0
224


আওয়ামীলিগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিএনপিকে শয়তানের সংসার ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে এই আহ্বান জানান তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৩-১৪ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি করবেন, তা হবে না। তাই আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, কমনওয়েলথ মহাসচিব অনুরোধ জানিয়েছেন , আরও বিশ্ব নেতৃবৃন্দর অনুরোধ আপনাদের কাছে আসবে। সুতরাং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনার প্রস্তুতি গ্রহণ করুন আর শয়তানের সংসার ছাড়ুন। যারা রাজনীতিতে পচে গেছে তাদের দলে ভিড়িয়ে কোনও লাভ হবে না।

বিএনপি একটি শয়তান দলে পরিণত হয়েছে এমন দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিটিং করে বললো – ‘আমরা শয়তানের সঙ্গেঐক্য করতে রাজি আছি’ অর্থাৎ বিএনপির নেতারাও শয়তান, বিএনপিও একটা শয়তান দলে রূপান্তরিত হয়েছে। বিএনপি নিজেরাই ঘোষণা দিয়েছে তারা নিজেরা শয়তান এবং শয়তানের সঙ্গে ঐক্য করতে চায়। এখন বাংলাদেশে শয়তান মুচকি মুচকি হাসে! সে বলে, এখন আর আমার কাজ কর্ম নাই, যা আছে বিএনপি করে দিবে। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তারা প্রমান করেছে, বিএনপির নেতারাও শয়তান আর তাদের নেতৃত্বে বিএনপি দলটা শয়তানে পরিণত হয়েছে।

গ্রেনেড হামলার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এমন দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে বিএনপি সারাদেশে একটি গন্ডগোল পাকানোর জন্য, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার জন্য একটি ছক এঁকেছে এমন দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, সেই ছকের অংশ হিসেবে তারা সারাদেশে কর্মসূচি দেওয়ার নামে গন্ডগোল করতে চায়। আওয়ামীলিগের নেতাকর্মীদের রাজপথে অতন্দ্রপ্রহরী হয়ে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হবে, আমাদেরকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো রাজপথে থাকতে হবে। এই হামলায় আওয়ামীলিগের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছে। এই গ্রেনেড হামলা খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারেক রহমানের পরিচালনায় ঘটানো হয়েছে। তাই দেশবাসীর প্রত্যাশা হচ্ছে এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক বাবর সহ যারা যুক্ত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হোক। বিচারকার্য হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই বিচারপতি সুচিন্তিত রায় দিবেন। এটা না হলে জনগণ মেনে নিবে না।

ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা আর তারেককে মাইনাস করতে চায় বিএনপি এমন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি এখন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের কাছে গিয়ে ধরনা দিয়েছে। তাদের কাছে ভাড়ায় খাটার জন্য তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। এই অনুরোধ জানানোর পর তারা আবার কিছু শর্ত দিয়েছে। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম, বিএনপির কিছু সমর্থক এতে বিএনপির ওপর রাগান্বিত হয়ে নানা ধরণের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। যাদের ৫টা ভোট নাই, বিএনপি আজকে তাদের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিচ্ছে।

তারা ড কামাল হোসেন, বি চৌধুরীকে ভাড়া করার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে মাইনাস করতে চায়। এই বিষয়টি এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে ধরা পড়ে গেছে। সেই কারণে দেখতে পাচ্ছি, ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের বিএনপি ভাড়া করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে এতে বিএনপির নেতা কর্মীরা বিক্ষুদ্ধ। বিএনপিকে বর্তমানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা চায় খালেদা জিয়া কারাগারে থাকুক, তারেক রহমান বিদেশে থাকুক। তারা ড. কামাল হোসেন আর বি চৌধুরীর হাত ধরে ক্ষমতায় যাবেন। খালেক ভাই আর বাবলু ভাইয়ের কাছে যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, তাদের হাত ধরে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন কখনও বাস্তব হবে না। আর এই বিষয়টি বুঝতে পেরে বিএনপি কিভাবে নির্বাচনকে বানচাল করা যায়, কিভাবেবাংলাদেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা যায়, কিভাবে একটা গন্ডগোল পাকানো যায় সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

আজকের আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার সরকার বহুগুণে শক্তিশালী এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, কমনওয়েলথের মহাসচিব বিএনপিকে চিঠি দিয়ে বলেছেন , আপনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। এই চিঠির অর্থ হচ্ছে, বর্তমান সংবিধানের আলোকে আগামী ডিসেম্বরে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আপনারা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আন্দোলনের পায়তারা করে দেশে বিশৃঙ্খলা করবেন না। প্রকারান্তরে কমনওয়েলথ মহাসচিব সেই কথাই বলে দিয়েছেন। তাই বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, গ্রেনেড হামলা মামলার রায় আর নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনও ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না।

২০১৩, ২০১৪ সাল ভুলে যান, তখনকার চেয়ে আজকের আওয়ামীলিগ এবং শেখ হাসিনার সরকার বহুগুণ শক্তিশালী, গ্রহণযোগ্য। নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি জানে আগামী নির্বাচনে তাদের কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই তারা দেশে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। আমাদেরকে ক্ষমতায় থাকার কারণে অলস হয়ে গেলে চলবেনা। সামনের দিনগুলোতে নির্বাচনের ফলাফল গুনে ঘরে না আনা পর্যন্ত আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে, জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে। অমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here