ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ক্যারিয়ারের ১৯৬তম ম্যাচে রোববার মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন মুশফিক। তার ব্যাটে ভর করে মামুলি স্কোর তাড়া করতে নেমে জয়ের দ্বার প্রান্তে টাইগাররা।
এদিন খেলতে নামার আগে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৯৫ ম্যাচে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ৩০টি ফিফটির সাহায্যে ৫ হাজার ২১৩ রান করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩৩ওভারের খেলা শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯০রান। জয়ের জন্য শেষ ১৭ওভারে টাইগারদের আর মাত্র ৬ রান করতে হবে। ৫২ও ১১ রানে ব্যাট করছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।
ভালোই খেলছিলেন, কিন্তু নিজের ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি সৌম্য সরকার। ১৩ বলে ১৯ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হল জাতীয় দলের এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে। তবে তার বিদায়ে সমস্যা নেই বাংলাদেশ দলের। জয়ের জন্য ১২০ বলে আর মাত্র ২০ রান করতে হবে টাইগারদের।
১৪৩ বলে করতে হবে মাত্র ৫০ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। খেলার এমন অবস্থায় দুর্দান্ত খেলতে থাকা সাকিব আল হাসান পাওয়েলের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তার আগে ২৬ বলে ৩০ রান করেন সাকিব।
মাত্র ৫ রানেই সাজঘরে ফেরার কথা ছিল লিটনের। ‘নো’ বলের কল্যাণে লাইফ ফিরে পাওয়া এই ওপেনার শেষ পর্যন্ত ফেরেন ৪১ রানে। দলীয় ৮৯ রানে কিমো পাওয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫৭ বলে ৪১ রান করেন লিটন।
হঠাৎ ছন্দ পতন ইমরুল কায়েসের। তামিম ইকবালের আউটের পর মাত্র ৪ রানে ফেরেন কায়েস।জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে দুই সেঞ্চুরিতে ৩৪৯ রান সংগ্রহ করে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন ইমরুল কায়েস।
সম্প্রতি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কায়েস রোববার ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ফেরেন মাত্র ৪ রানে।
ইনিংসের সপ্তম ওভারেই বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে দিয়ে নো বলের কল্যাণে লাইফ পান লিটন কুমার দাস। ঠিক পরের ওভারেই সাজঘরে দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। প্রায় আড়াই মাস পর প্রতিযোগিতা মূলক ক্রিকেটে ফিরে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তামিম এদিন ফেরেন মাত্র ১২ রানে।
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৫/৯ রানে গুটিয়ে যায় উইন্ডিজ।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ওপেনার শাই হোপ। এছাড়া ২৮ বলে ৩৬ রান করেন কিমো পাওয়েল। ৩২ রান করেন রোস্টন চেজ। বাংলাদেশ দলের হয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোস্তাফিজুর রহমান তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া একটি করে উইকেট ভাগাভাগি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান ও রুবেল হোসেন।
লক্ষ্যটা দুই শ-র নিচে। তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের শুরুটা ছিল ধীর-স্থির। প্রথম ৬ ওভারে এসেছে মাত্র ২১ রান। কোনো বাউন্ডারি নেই। পরের ওভারে কেমার রোচকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ফ্লিক করে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটন। না, আউট হয়নি। রোচ বোলিং ক্রিজে দাগ পেরিয়ে যাওয়ায় ‘নো বল’। কিন্তু লিটন ‘জীবন’ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি। ৫৭ বলে ৪১ রানের ইনিংসটা তিনি আরও টানতে পারতেন। দলকে অন্তত পৌঁছে দিতে পারতেন জয়ের কাছাকাছি। কিন্তু লিটন ফিরেছেন অভ্যাস পাল্টাতে না পারার খেসারত গুণে।
জয়ের জন্য ১৯৬ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চোট কাটিয়ে জাতীয় দলে ফেরা তামিম ইকবাল ফিরেছেন লিটনেরও আগে, আসলে সবার আগে। অষ্টম ওভারে রোষ্টন চেজের স্পিন খুব ধীরে এসেছে তামিমের ব্যাটে। আর তামিম শট খেলেছেন একটু আগে। ফল যা হওয়ার তাই—তামিমের (১২) ব্যাটের কানায় লেগে বল দেবেন্দ্র বিশুর মুঠোবন্দী। পরের ওভারে ওশানে থমাসের গতির কাছে হার মেনে বোল্ড ইমরুল কায়েস। ওই ওভারের সবগুলো ডেলিভারিই গড়ে ১৪০ কিলোমিটারের ওপরে করেছেন থমাস। ইমরুল এই গতির কাছে হার মেনেই জিম্বাবুয়ে সিরিজের দুর্দান্ত ফর্ম এই সিরিজে অনূদিত করতে পারেননি। নবম ওভারে ইমরুল যখন আউট হলেন বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৪২।
এখান থেকে তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে সম্ভাব্য মড়ক এড়ান মুশফিক-লিটন। ১৯তম ওভারে কেমো পলকে অযথাই ক্রস খেলতে গিয়ে বোল্ড হন লিটন। শটটি খেলার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। অনসাইডে খেলার প্রতি দুর্বলতা থেকে লিটন সম্ভবত লোভ সংবরণ করতে পারেননি। তবে চতুর্থ উইকেটে সাকিব-মুশফিকের বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলায় লিটনের আউট সেভাবে ম্যাচে প্রভাব ফেলেনি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চতুর্থ উইকেটে ৩৬ বলে ৩৯* রানের জুটি গড়েছেন দুজন। বাংলাদেশ ২৪ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১২৬। মুশফিক ৩১ রানে অপরাজিত, অন্য প্রান্তে সাকিবের সংগ্রহ ২১*।
মিরপুরে বছরের শেষ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ। তিন পেসার ও চার ওপেনার নিয়ে মাঠে নেমেছে মাশরাফি বিন মুতর্জার দল। দলে মোট পাঁচটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। চোট কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। চোটের জন্য এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না দুজন। সেই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজও ফিরেছেন ওয়ানডে দলে। এ ছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গায় দলে ফিরেছেন পেসার রুবেল হোসেন। এই পাঁচজনকে জায়গা দিতে দল থেকে বাদ পড়েছেন আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এর আগে টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সর্বশেষ তিনটি ওয়ানডে সিরিজের দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।
এদিকে আজকের ম্যাচ এ সমান সুযোগ দেখছেন মাশরাফি
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও হেরেছে সফরকারীরা। আর ওয়ানডেতে তো ঘরের মাটিতে কয়েক বছর ধরেই দুর্দান্ত খেলছে বাংলাদেশ। তারপরও ক্যারিবীয়দের এখনই হোয়াইটওয়াশ করার চিন্তা মাথায় আনছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। আজ শুরু হতে যাওয় ওয়ানডে সিরিজে তিনি দু’দলেরই সমান সুযোগ দেখছেন-
প্রশ্ন : ঘরের মাঠে কী এটাই আপনার শেষ সিরিজ?
মাশরাফি : বলা কঠিন, আসলে ভবিষ্যতের কথা তো বলা যায় না। আর আমার কোনো দিনই কোনো বিষয় নিয়ে আগে থেকে কিছু ঠিক থাকে না। মানসিকতা ঠিক করে কিছু করি না।
প্রশ্ন : বছরের শুরুটা খারাপ হলেও শেষদিকে পারফরম্যান্স ভালো যাচ্ছে। বছরের শেষ সিরিজে কী আরও ভালো করতে চান?
মাশরাফি : দুটি ফাইনাল (শ্রীলংকার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং এশিয়া কাপ) বাদ দিলে এ বছর আমরা অনেক ভালো করেছি। বিশেষ করে এশিয়া কাপ জিতলে সেটা আলাদা কিছু হতো। এ বছর রেটিং খুব ভালো আছে। অবশ্যই, বছরটা ভালোভাবে শেষ করতে পারলে দারুণ হবে। সামনের বছর শুরু থেকেই অনেক চ্যালেঞ্জ আছে।
প্রশ্ন : ভালো করার জন্য করণীয়?
মাশরাফি : মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং কেমন হবে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলে বোলারদের চ্যালেঞ্জ থাকবে। আসলে উইকেট কেমন আচরণ বরবে তা বুঝতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন : হোয়াইটওয়াশের কথা ভাবছেন কিনা?
মাশরাফি : একটি ম্যাচও হয়নি এখনও। হোয়াইটওয়াশের ভাবনা তো মাথায় আসারই সুযোগ নেই। তবে প্রথম ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের ফরম্যাটে দু’একজনই ম্যাচ বদলে দিতে পারে। ফরম্যাট যত ছোট ওরা তত বেশি মানিয়ে নিতে পারে। প্রথম ম্যাচের দিকে ফোকাস থাকাই ভালো।
প্রশ্ন : জিম্বাবুয়েকে কোনো ম্যাচে অলআউট করতে পারেননি। এটা কোনো সতর্কবার্তা কিনা? আর আপনার বোলিং নিয়ে..
মাশরাফি : জিম্বাবুয়েকে অলআউট করতে না পারলেও ম্যাচ জেতার জন্য যা করা দরকার সেটা করতে পেরেছি। ম্যাচ কীভাবে জিতব তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ওই সিরিজে দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছিল। রুবেল এশিয়া কাপে আমাদের সেরা বোলার ছিল, সে ওই সিরিজে খেলেনি। তবে ওদের অলআউট করার দরকার ছিল। কিন্তু ম্যাচ জেতার জন্য যা করা দরকার সেটা আমরা করতে পেরেছি। আর আমি এশিয়া কাপ থেকে ইনজুরি নিয়ে ফিরেছিলাম, তাই শতভাগ ফিট থাকার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন : ফর্মে থাকা চার ওপেনারকে নিয়ে কী পরিকল্পনা?
মাশরাফি : আমাদের ১৬ জনের স্কোয়াড আছে। ঘরের মাটিতে সাধারণত দলে ১৪ জন রাখা হয়। সর্বোচ্চ ১৫ জন। সেখানে ১৬ জন রাখার কারণ কারও আত্মবিশ্বাস যেন নিচে না নেমে যায়। যারা সম্প্রতি ভালো করছে বা করে আসছে তাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা। আর মধুর সমস্যা হল সবাই ফর্মে রয়েছে। তবে আমাদের তো একটা সিদ্ধান্তে যেতেই হবে। ভালো হলে মনে হবে এটাই ঠিক আছে। খারাপ হলে মনে হবে যে রান করেও বাদ গেছে হয়তো ওকেই খেলালে ভালো হতো। কথাবার্তা অনেক চলবে। তবে সবার সঙ্গে কথা বলে একটি সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
প্রশ্ন : পেস বোলার হিসেবে সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ভাবনা…
মাশরাফি : রুবেল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের সময় অসুস্থ ছিল। সেই সুযোগটা সাইফউদ্দিন ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। রুবেল অসাধারণ। সবার থেকেই ভালো খেলছে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে রুবেল যেন তার সেরা জায়গা থেকে পিছিয়ে না যায়। একইসঙ্গে সাইফউদ্দিন তো শুরু করেছে, এরকম চিন্তা করেই তাকেও ১৬ জনের দলে রাখা।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপের আগে কেমন উইকেট চান?
মাশরাফি : এখানকার উইকেট সেটা দিতে পারবে না। এই মাটিতে এটা অসম্ভব। ইংল্যান্ড কিংবা নিউজিল্যান্ড উইকেটের সঙ্গে মেলানো সম্ভব নয়। এখন আমাদের কীভাবে জেতা যায় ওইদিকেই ফোকাস থাকা জরুরি। নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেয়া যাবে।
প্রশ্ন : উইকেট কেমন দেখছেন?
মাশরাফি : দিবারাত্রির ম্যাচে শিশিরের প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ স্পিনাররা কতটা সহায়তা পাবে সেটাও। তবে পেস বোলিংয়ে ভালো ব্যাকআপ রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে আমরা ভালো ছন্দে খেলছি। তিনজন পেস বোলার নিয়ে সব সময় খেলছি। এমনকি কখনও চারজনও খেলানো হচ্ছে। তাই টেস্ট ম্যাচের বিবেচনায় ওয়ানডেতে একাদশ নির্বাচন করা যাবে না। আমি তিনজন পেস বোলার খেলাব। আর আমরা পেস বোলিং দিয়ে ফ্লাট উইকেটেও ভালো করে আসছি।
প্রশ্ন : টপ অর্ডারে কাউকে নিচে খেলানোর সম্ভাবনা কতটুকু?
মাশরাফি : সম্প্রতি ইমরুল ছয়ে ব্যাটিং করেছে। সেখানে (এশিয়া কাপে) অসাধারণ একটা ইনিংস খেলেছে। সৌম্য ফাইনালে (এশিয়া কাপের) সাত নম্বরে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছে। বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা এমন কিছু করতেও পারি!
প্রশ্ন: কত রান জয়ের জন্য নিরাপদ?
মাশরাফি : এটা নির্ভর করছে কেমন উইকেট হবে তার ওপর। এই উইকেটে ২৬০ রান সাধারণত নিরাপদ ধরা হয়। শিশির পড়লে হয়তো আরও ২০-২৫ রান বেশি দরকার হয়। আর যদি শুরুতে শিশির না থাকে ২৪০-২৫০ রান করেও আমরা ম্যাচ জিতেছি।
প্রশ্ন : আপনি ২০০তম ম্যাচের সামনে…
মাশরাফি : আমি আগেও বলেছি, এসব আমাকে স্পর্শ করে না। এগুলো আমার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণও না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কালকের (আজ) ম্যাচটা জেতা। এদিক থেকে ভালো লাগছে যে, বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে অনন্ত ২০০তম ম্যাচ হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভালো লাগবে একটা সময়। যখন মানুষ বলবে, তুমি বাংলাদেশের হয়ে ২০০টা ম্যাচ খেলেছ। এটা অবশ্যই একটা অর্জন।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ কী ফেভারিট হিসেবেই শুরু করছে?
মাশরাফি : আমি বলব দু’দলের সমান সমান সুযোগ। তাদের দুর্দান্ত কিছু পেস বোলার রয়েছে। তারা জোরে বল করতে পারে। দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে গেলে চাপ এসে যায়। এই জায়গাগুলো চিন্তা করে কাজ করতে হবে। তবে টেস্টে যেভাবে জিতেছি সেভাবে সহজ জয় আশা করছি না।
দেশের মাটিতে ম্যাশের এটাই শেষ সিরিজ?
এতদিন তিনি শুধু ছিলেন ক্রিকেটাঙ্গনের নেতা; এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও নেতা হয়ে গেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। নড়াইল জুড়ে স্লোগান- ‘মাশরাফি ভাইয়ের সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন’।
সবাই জানে, আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলে যাবেন জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি। তারপর কী হবে কেউ জানে না। এমনকী মাশরাফি স্বয়ং জানেন না, বিশ্বকাপের পর কী সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি!
বল হাতে এখনও তিনি দেশের সেরা পেসার। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনতার ভোটে এমপি নির্বাচিত হলেও বিশ্বকাপ পর্যন্ত ক্যারিয়ার টানবেন মাশরাফি। এখন শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরম্যাটেই খেলে থাকেন তিনি। বিশ্বকাপ শেষেই যদি তিনি অবসরের ঘোষণা দেন; তবে উইন্ডিজের বিপক্ষে রবিবার থেকে শুরু হতে চলা ওয়ানডে সিরিজই হবে দেশের মাটিতে তার শেষ সিরিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর বাংলাদেশ আগামী ফেব্রুয়ারিতে যাবে নিউজিল্যান্ড সফরে। সেখান থেকে ফিরে কদিনের বিরতি।
এরপরই শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপ অভিযান। বিশ্বকাপ খেলার আগে মে মাসে আয়ারল্যান্ডে খেলবে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ। এর মাঝে দেশের মাটিতে আর কোনো সিরিজ নেই। আজ সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিয়ার নিয়ে প্রশ্নটি উঠলে ম্যাশ রহস্য রেখেই জানান, ‘বলা কঠিন, আসলে ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না। আমার কোনো দিনই ভাবনা থাকে না। কোনো কিছু ভেবে করি না। দেখা যাক সামনে কী হয়।
টাইগার ক্যাপ্টেনের চিন্তায় এখন রবিবারের ম্যাচ। ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডেতে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না তিনি। এরপর তার ভাবনা চলে আসবে সিরিজ জয়। মাশরাফি তো এমনই…।