আসছে ‘স্মার্ট’ বাজেট

0
272

বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শহরমুখী মানুষের স্রোত ঠেকানো এবং গ্রামে শহরের সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। এবারে বাজেটের আকার হতে পারে ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। বিপুল আয়তনের এ বাজেটে অর্থের সংস্থানের মূল উৎস ধরা হচ্ছে রাজস্ব খাত। আশা করা হচ্ছে, এ খাতে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা আসবে। বাকি অর্থের সংস্থান হবে রাজস্ববহির্ভূত খাত থেকে আয় এবং অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস পাওয়া ঋণ।

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের টানা ১০টি বাজেট থেকে কী এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে এবারের বাজেটে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এবারের বাজেট হবে ‘স্মার্ট’ বাজেট। এবার গতানুগতিক বাজেট হবে না। প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে নতুন আঙ্গিকে তৈরি করা হচ্ছে এই বাজেট। বাজেট বক্তার বইও হবে সংক্ষিপ্ত।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার এ বাজেট উপস্থাপন করবেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটা তার প্রথম বাজেট। জানা গেছে, বাজেটে পল্লী অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু করেছে। কৃষি জমির ক্ষতি না করে পরিকল্পিতভাবে গ্রাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা ঋণ চাইলে এসব প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে ঋণ দেবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক অর্থমন্ত্রীর ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য ‘অগ্রগতির ধারাবাহিকতা: সম্ভাবনাময় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক বাজেট বক্তৃতার বই ছিল ১৬৩ পাতার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, উচ্চ প্রবৃদ্ধি রচনা’ শীর্ষক বাজেট বক্তৃতার বই ছিল ১২৮ পাতার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য  ‘প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক বাজেট বক্তৃতার বই ছিল ১১৮ পাতার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের’ শীর্ষক বাজেট বক্তৃতার বইয়ের পরিধি ছিল ১৫০ পাতার। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক বাজেট বক্তৃতার বইয়ের আকার ছিল ১৫৬ পাতার।

এবারের বাজেটকে কেন স্মার্ট বাজেট বলছেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এবারের বাজেটের আকার বাড়লেও বাজেট বক্তৃতার বই হবে সংক্ষিপ্ত। বাজেটের লক্ষ্য সুদূর প্রসারী হলেও তা অর্জন করতে চেষ্টা হবে সাধ্যের মধ্যে। যা সর্বস্তরের জনসাধারণের জন্য হবে সহজ পাঠ্য। দেড়শ-দুশ’ পাতার বাজেট বক্তৃতার বই নয়, এবার বাজেট বক্তৃতার বই সর্বোচ্চ ১০০ পাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা চলছে। আর এর মধ্যেই থাকবে দেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার। আমরা কাজে বিশ্বাসী।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজেট প্রণয়ন কোনও বড় কথা নয়, বাজেট বাস্তবায়নই বড় কাজ। এটিই আমার বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু এক বছরের জন্য নয়, সূদুর প্রসারী লক্ষ্য নিয়ে বিশেষ করে ২০৪১ সালকে টার্গেট করে তৈরি হবে এবারের বাজেট। সাধারণ মানুষের জন্যই তৈরি হচ্ছে এবছরের বাজেট।’

এ ছাড়া এবার বাজেটে অন্যতম চমক থাকবে রপ্তানি বৃদ্ধিতে নগদ সহায়তা বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে যথারীতি অব্যাহত থাকবে ভর্তুকি। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। গতবারের তুলনায় এ খাতে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা ভর্তুকি বাড়তে পারে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষিতে ভর্তুকি আছে ১৩ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এ বছর ভর্তুকি দেওয়া হবে ১৭ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here