টাইটানিকের যাত্রা শুরু হওয়া অভিশপ্ত শহর। সেখানেই বিশ্বকাপের টাইটানিক ডুবি হতে যাচ্ছিল। হিমশৈলের মতোই আফগানিস্তানে ধাক্কা খেয়ে তলিয়ে যেতে পারতেন বিরাট কোহালিরা।
সেখান থেকে বোলারদের হাত ধরে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ম্যাচ জিতে নিল ভারত। যে ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ অভিযানই মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার উপক্রম হতে পারত, তা শেষ হল রুদ্ধশ্বাস ওভার দিয়ে আর মহম্মদ শামির হ্যাটট্রিকে। সারা মাঠে ছড়িয়ে পড়ল তেরঙ্গার উচ্ছ্বাস। ১১ রানে জিতে অপরাজিতই থেকে গেল কোহালির ভারত। কারও কারও মনে হচ্ছে, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে ম্যাচ জেতাটা তিরাশি বিশ্বকাপের মতোই শুভলক্ষণ হতে পারে।
ভারতের দেওয়া ২২৫ রানের জবাবে আফগানদের শুরুটা খুব একটা খারাপ হয়নি। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২০ রান। লক্ষ্য ও উইকেটের বিচারে সেটা নেহায়েতই কম নয়। প্রথম ভুলটা করেন হযরতুল্লাহ জাজাই। মোহাম্মদ শামিকে তেড়েফুড়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন আফগান ওপেনার।
এরপর অবশ্য ৪৪ রানের জুটি বেধে ভারতীয়দের চাপে রাখেন অধিনায়ক গুলবদিন নাইব ও রহমত শাহ। ১৭তম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়াকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন গুলবদিন। ৪২ বলে ২৭ রান করেন আফগান অধিনায়ক।
উইকেট পেলেও কোনোভাবেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারছিল না ভারত। তবে কোহলিকে ম্যাচে ফেরান ভারতের প্রধান বোলিং অস্ত্র জাসপ্রিত বুমরাহ। এই পেসার এক ওভারেই তুলে নেন আফগানদের হাশমতুল্লাহ শাহিদী ও রহমত শাহকে।
দলীয় ১৩০ রানে আজগর আফগানকে বোল্ড করেন যুবেন্দ্র চাহাল। এরপর নজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন মোহাম্মদ নবী। ২৩ বলে ২১ রান করে জাদরান ফিরলেও নবী আফগানদের সাহস যোগাচ্ছিলেন।
রশীদ খানকে সাথে নিয়ে যোগ করেন মূল্যবান ৩৪ রান। ১৬ বলে ১৪ রান করেন রশীদ খান। আফগানরা যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ প্রায় নিয়েই নিয়েছে ঠিক তখনই ভারতকে ম্যাচে ফেরান চাহাল। ধোনি দারুণ এক স্টাম্পিং করে ভারতীয়দের মুখে হাসি ফোটান।
শেষের দিক একাই ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মোহাম্মদ নবী। তবে সতীর্থদের কাছ থেকে নুন্যতম সহায়তা না পাওয়ায় ম্যাচ হেরে বসে আফগানিস্তান। শেষ ওভারের শেষ তিন বলে তিন উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন পেসার মোহাম্মদ শামি। এক বল হাতে থাকতেই ২১৩ রানে শেষ হয় আফগানিস্তানের ইনিংস।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা ভারতীয় দল করে ২২৪ রান। ভারতের রান যখন ৭, মুজিব উর দৃষ্টিনন্দনভাবে বোল্ড করেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মাকে। এরপর ধীরে ৩০ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন অপর ওপেনার কেএল রাহুল।
বিরাট কোহলি এবং বিজয় শঙ্করে আশা দেখছিল ভারত। কিন্তু ভালো খেলা বিজয় ২৯ রান করে আউন হন। অপর প্রান্তে থাকা কোহলিকে অবশ্য স্পিন দিয়ে কাবু করতে পারছিলেন না রশিদ খানরা। তবে ৬৩ বলে ৬৭ রান করার পরে শট খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন বিরাট।
ধোনি এবং কেদার যাদব কচ্ছপ গতির ব্যাটিং শুরু করলে ভারতের বড় রানের স্বপ্ন ভেঙে যায়। ৫২ বলে ২৮ রান করে ফিরে যান ধোনি। আজ কিছু করতে পারেননি হার্ডিক পান্ডিয়াও। কেদার যাদব করেন ৬৮ বলে ৫২ রান।