দেশে উদ্বেগজনক হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরেই ডেঙ্গুর বিস্তার আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। গত সোমবারের সর্বোচ্চ রেকর্ড ভেঙে গতকাল মঙ্গলবার শুধু রাজধানীতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭৩ জন। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ জন। এর আগে গত সোমবার এই সংখ্যা ছিল ঘণ্টায় ১৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত সাত দিন ধরেই দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ বৃদ্ধি এ বছরের (গত জানুয়ারি থেকে) অন্যান্য
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দেয়া সর্বশেষ তথ্য ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালগুলো মোট সাত হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে জুন-জুলাই মাসেই ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৮৬৪ জন। আর জুলাই মাসের ২২ দিনে এটা সর্বোচ্চ। জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর ৭০ ভাগই ভর্তি হয়েছেন জুলাই মাসের ২২ দিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪০৩ জন। এটা এ বছরে সর্বোচ্চ। ২১ জুলাই ভর্তি হয়েছেন ৩১৯ জন, ২০ জুলাই ৩০৮ জন এবং ১৯ জুলাই ২৬৯ জন। এখন আক্রান্তের প্রবণতা আরো তীব্র হচ্ছে। ঢাকায় সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন বেশি।
এ বছর ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের মধ্যে এপ্রিলে দু’জন, জুনে দু’জন ও জুলাই মাসে একজন মারা যান। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্র বলছে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত চারগুণ হবে। দু’জন চিকিৎসকও মারা গেছেন। বেসরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা তিন থেকে চার লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জ্বর না কমা বা অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকা, বমি হওয়া, পেটে তীব্র ব্যথা, রক্তক্ষরণ, মাথা ধরা, চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা প্রস্রাব না হওয়া বা কম হওয়া, খুব বেশি দুর্বল হয়ে পড়া, নিদ্রাহীনতা ও আচরণের আকস্মিক পরিবর্তন ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ। অন্তঃসত্ত্বা, বৃদ্ধ, শিশু, সদ্যোজাত এবং ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, লিভার ও কিডনির রোগীরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসায় বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।