ঈদে ভয়াবহ হতে পারে ডেঙ্গু

0
197

রাজধানী ঢাকার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত দেশের ৫০টি জেলায় শনাক্ত হয়েছে ডেঙ্গু রোগী। তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে কমপক্ষে আরও দুই জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩ হাজার ৬৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৩ হাজার ৮৪৭ জন। এ সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ৯ হাজার ৭৮২ জন ছাড়পত্র পেয়েছে। আর ঢাকা শহরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১২ হাজার ৩৫৪ জন।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, যেসব জেলা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলো হলো—ঢাকা বিভাগের ঢাকা, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ি, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ; চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি; খুলনা বিভাগের খুলনা জেলা, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও চুয়াডাঙ্গা; রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর; রংপুর বিভাগের রংপুর জেলা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও, বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলা, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি এবং সিলেট জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ১৪ জন এখনও চিকিৎসাধীন। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভর্তি থাকা রোগীদের সবাই ঢাকা থেকে ফেরত আসার পর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহ ধরে একজন, দুজন করে জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি শুরু হয়। গতকালও একজন ভর্তি হয়েছেন। পরীক্ষায় তাদের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত মোট ১৯ জনকে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৫ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন। অন্যদের চিকিৎসা চলছে।

আক্রান্তরা জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন কাজে ঢাকায় ছিলেন। ঢাকা থেকে ফেরার পরই তারা জ্বরে আক্রান্ত হন। একই কথা জানিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদও। তিনি জানান, যশোরে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু নেই। কেবল ঢাকা ফেরতরাই আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনেই কোরবানির ঈদ। এই ঈদে ঢাকা শহরের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষ পরিবার-স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে যায়। ঈদের সময়ে গ্রামের বাড়িতে গেলে এই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। কারণ, যেকোনও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুস্থ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে উল্লিখিত জেলাগুলোর হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here