রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। দেশের অন্তত ৬১ জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। ডেঙ্গুতে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন ও বরিশালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছরের চলতি জুলাই মাসেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ হাজার ১৮২ জন। এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১৫ হাজার ৩৬৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৯৫৩ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ হাজার ৪০৮ জন।
সরকারি হিসেবে গতকাল পর্যন্ত দেশের ৫০টি জেলার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী। এর বাইরে থাকা ১৪টি জেলার মধ্যে ১১টি জেলার হাসপাতালে গতকাল ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিল বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গতকাল পর্যন্ত ৫০ জেলায় চিকিৎসাধীন রোগীর তথ্য জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১২টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত এবং ৩৫টি বেসরকারি হাসপাতল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৩৭। জুলাই মাসে ২৯ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ জন। ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৮৩। সরকারি হিসাব থেকে জানা গেছে, বান্দরবান, মেহেরপুর, নড়াইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোনায় কোনো ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৩৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রতি ঘণ্টায় ভর্তি হচ্ছে ৫৬ জনের উপরে। চলতি জুলাই মাসেই আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৮২ জন। ঢাকার বাইরে থেকেও দিন দিন রোগী আসছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পরিসংখ্যান মতে, জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন ৪৩৯ জনের উপরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রাজধানীর বাইরে ঢাকা জেলা থেকে ১৫৯ জন, গাজীপুর থেকে ৯৯ জন, গোপালগঞ্জ ১০ জন, মাদারীপুর ১৭ জন, মানিকগঞ্জ ৩২ জন, নরসিংদী ২১ জন, রাজবাড়ী থেকে ২৭ জন,শরীয়তপুর ৯ জন, টাঙ্গাইল ৩৭ জন, মুন্সীগঞ্জ ১৮ জন, কিশোরগঞ্জ ৮৪ জন, নারায়ণগঞ্জ ১৯ জন, ফরিদপুর ২ জন, চট্টগ্রাম থেকে ১৪৩ জন, ফেনীতে ৭০ জন, কুমিল্লা ৫১ জন, চাঁদপুর থেকে ৮৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০ জন, লক্ষ্মীপুর ২২ জন, নোয়াখালীতে ৩০ জন, কক্সবাজার ১৩ জন, খাগড়াছড়ি ৫ জন, রাঙ্গামাটিতে ৩ জন, বান্দরবন একজন, খুলনায় ১২৮ জন, কুষ্টিয়া থেকে ৫৮ জন, মাগুরা ৩ জন, নড়াইল ২ জন, যশোর ৭১ জন, ঝিনাইদহ থেকে ২৫ জন, বাগেরহাট ৮জন, সাতক্ষীরা ১৭ জন, চুয়াডাঙ্গা থেকে ৬ জন, মেহেরপুর একজন, রাজশাহী থেকে ৬২ জন, বগুড়া ৯২ জন, পাবনা ৪৭ জন, সিরাজগঞ্জ ১৯ জন, নওগাঁয় ৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১১ জন, নাটোর ২ জন, রংপুর ৬১ জন, লালমনিরহাট ২ জন, কুড়িগ্রাম ৫ জন, গাইবান্ধায় ৪ জন, নীলফামারি ৫ জন, দিনাজপুরে ১৭জন, পঞ্চগড় একজন, ঠাকুরগাঁও ৬ জন, বরিশাল থেকে ৪২ জন, পটুয়াখালী ১২ জন, ভোলা ৬ জন, পিরোজপুর ২ জন, ঝালকাঠি একজন, বরগুনা ১৫ জন, সিলেট থেকে ৮০ জন, সুনামগঞ্জ ৪ জন, হবিগঞ্জ ৭ জন, মৌলভীবাজার ১৬ ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৩০শে জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আটজনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের মধ্যে এপ্রিলে দু’জন, জুনে দু’জন ও জুলাই মাসে চারজন মারা যান। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্র বলছে মৃত্যুর সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচগুণের বেশি হবে।