প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নার্সিং হলো সবচেয়ে সম্মানজনক পেশা। একজন মানুষকে সেবা করার মাধ্যমে সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে আনার মতো আনন্দ আর কি হতে পারে? এই মহৎ পেশায় যুক্ত হতে মানুষ যেন আগ্রহবোধ করে এজন্য আমাদের সরকার নার্সদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। আর্তমানবতার সেবায় অভিজ্ঞতা ও অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে গ্র্যাজুয়েট নার্সদের এগিয়ে আসতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বাংলাদেশে একটি প্রথম আন্তর্জাতিকমানের নার্সিং কলেজ। এ নার্সিং কলেজ থেকে যেসব শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন করলেন তারা সবাই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিয়েছেন। তাদের দেখে অনেক তরুণ-তরুণী এ নার্সিং পেশায় আসতে আগ্রহী হবে। শিগগিরই এখানে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ জন্য জমিও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন প্রথম সরকার গঠন করি তখন থেকেই দেশের স্বাস্থ্য সেবার প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছি। এ জন্য ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কমিউনিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করি। সাতটি নার্সিং ইন্সটিটিউটকে কলেজে উন্নীত করে সেখানে বিএসসি কোর্স চালু করি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের কাজই হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করা, জনগণকে সেবা দেয়া। আমরা স্বাস্থ্যসেবাকে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করার পর ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে এই সেবা বন্ধ করে দেয়। এর যুক্তি হিসেবে তারা বলে, কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষ সেবা নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দিবে। অথচ প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য চালু করা এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমটি খুব দরকারি। এখানে দরিদ্র মানুষেরা সহজেই সেবা পেয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় প্রসূতি নারী ও শিশুরা।
অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহসভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের সিইও মো. তৌফিক বিন ইসমাইল।
এছাড়া গ্র্যাজুয়েশন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার স্কুল অব মেডিসিন কেপিজে হেলথ কেয়ার ইউনির্ভাসিটি কলেজের উপাচার্য ও ডিন প্রফেসর দাতো ডা. লোকমান সাঈম। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী দাঁতোসেরি মোহাম্মদ নজিব বিন তুন আব্দুল রাজাক বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ট্রাস্টের সহ-সভাপতি শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে এই হাসপাতাল উদ্বোধন করেন এবং ৮ এপ্রিল ২০১৫ সালে বর্তমান নার্সিং কলেজটির যাত্রা শুরু হয়।