জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলীয় সিনিয়র নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী স্থান ত্যাগ করলে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতি লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র সংগঠনের শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালোব্যাজ ধারণ করা হয়।
সকাল ৭টায় ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জমায়েত এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে জাতীয় তিন নেতা ও ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত।
বিকাল ৩টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় জাতীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নিভৃত প্রকোষ্ঠে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে।
সেদিনের ওই ঘটনা দেশবাসীসহ সমগ্র বিশ্ব স্তম্ভিত হয়েছিল। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে জঘন্য ও বর্বরোচিত এই হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
ইতিহাসবিদদের মতে- মানবসভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কময়, রক্তঝরা ও বেদনাবিধুর রাত ৩ নভেম্বর। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা ও তার সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা একই সূত্রে গাঁথা।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় চার নেতাকে তাদের সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর এ জাতীয় চার নেতা সে প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। এ কারণে তাদের নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়।