ছুটছে দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া

0
147

কয়েক মাস ধরেই রাজধানীর বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। সেই দাম এখনো নাগালে আসেনি। এতে সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কম। বন্যার কারণে উৎপাদনও কমে গেছে। কৃষকের কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। ফলে বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। শীতের আমেজের সঙ্গে রাজধানীর বাজারে শোভা পায় বাহারি সব মৌসুমি সবজি। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কম থাকে। কিন্তু এ বছর বন্যার কারণে দাম বেড়েই চলছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা হয়েছে। এর মাধ্যমে আবারও আগের দামে ফিরে গেল গাজর। গত সপ্তাহ বাদ দিলে তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাজরের কেজি একশ টাকা রয়েছে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো, শিম, উচ্ছে, বেগুন, বরবটি। গত কয়েক মাসের মতো পাকা টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

মাসের অধিক সময় ধরে বাজারে শীতের আগাম সবজি শিম পাওয়া গেলেও তা এখনো অনেকটাই নিম্ন আয়ের নাগালের বাইরে। অবশ্য সময়ের সঙ্গে বাজারে শিমের সরবরাহ বেড়েছে। তবে এতে দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা থাকলেও উল্টো বেড়েছে। বাজার ও মানভেদে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, তা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১১০ টাকা। স্বস্তি মিলছে না শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামেও। ছোট একটি ফুলকপি কিনতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। একই দাম দিতে হচ্ছে বাঁধাকপির জন্য।

বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, উস্তে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। নতুন করে কিছুটা দাম বেড়েছে ঢেঁড়সের। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেঁড়সের দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৯০ টাকা হয়েছে। এর সঙ্গে পটল, শসা, ঝিঙা, ধুন্দুল, কচুর লতি, কাঁকরোল কোনো সবজির দামই ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে না। শসার কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

সরকার দুই দফায় আলুর দাম বেঁধে দিলেও বাজারে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। সরকার প্রথমে খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা এবং পরবর্তীতে ৩৫ টাকা বেঁধে দেয়। তবে ভোক্তারা এক কেজি আলু ৪৫ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না। এমনকি এখন কোথাও কোথাও আলুর কেজি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারে আসা নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকার ওপরে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়ী কামরুল বলেন, হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের সবজিও বাজারে বাড়ছে। তবে বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে এবার সবজির অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যে কারণে এখনো সবজির এত দাম। তবে সামনে বন্যা বা বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, সে কারণে কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা কমবে বলে আমাদের ধারণা। বাজার করতে আসা ইকরামুল হক বলেন, শীত এসে গেছে। বাজারেও বিভিন্ন সবজি আসছে। কিন্তু আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। নামমাত্র সবজি কিনতেই পকেটের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here