বিশেষ সুবিধায় খেলাপি ঋণ কমছে

0
136

করোনাভাইরাসের কারণে ঋণের কিস্তি ফেরত না দিলেও নতুন করে কোনো গ্রাহককে খেলাপি করা হচ্ছে না। ঋণ ফেরত না দিলেও খেলাপি হবে না- এমন নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় বাড়িয়েছে। ফলে খেলাপি ঋণ নিম্নমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুন-জুলাইয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। মোট বিতরণকৃত (আউটস্ট্যান্ডিং) ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যা আগের প্রান্তিকের চেয়ে ১ হাজার ৬৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা কম। আগের অর্থবছর ২০১৯-২০ এর শেষ প্রান্তিক মার্চ-জুন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ বা ব্যাড লস ঋণের পরিমাণ ৮১ হাজার ৪৬০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের ৮৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। আর মধ্যম মানের বা ডাউটফুল ঋণ ৪ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের ৫ শতাংশ।

আগের প্রান্তিকে খেলাপির ঋণের প্রাথমিক পর্যায় বা সাবস্ট্যান্ডার্ড ঋণ ৮ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। অতি মন্দ বা ব্যাড অ্যান্ড লসের পরিমাণ ৮৩ হাজার ৬৪২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যা মোট খেলাপি ঋণের ৮৭ দশমিক শতাংশ। বাকি ১৩ শতাংশ মধ্যম বা ডাউটফুল ঋণ ও প্রাথমিক বা সাবস্ট্যান্ডার্ড ঋণ। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাড অ্যান্ড পর্যায়ের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ছাড়া উপায় নেই। ঋণের কিস্তি না দিলে খেলাপি হবে না-করোনা মহামারীর কারণে এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ায় নতুন করে কেউ খেলাপি হচ্ছে না। কিন্তু আগের যে সাবস্ট্যান্ডার্ড ও ডাউটফুল ঋণ ছিল সেগুলো না দিলে ব্যাড অ্যান্ড লস ঋণে পরিণত হবে এটাই স্বাভাবিক। খেলাপি ঋণ ব্যাড অ্যান্ড লস পর্যায়ে পৌঁছে গেলে সেগুলো স্বাভাবিকভাবে আদায়ের সুযোগ কমে আসে। তবে খেলাপি ঋণ যে পর্যায়েই থাকুক তা খেলাপিই।

করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিপর্যয় ঘটে। বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন, বিপণন, যোগাযোগ ও আমদানি-রপ্তানি। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকার ১ লাখ ১১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকার ২০টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। পাশাপাশি আগে বিতরণ করা ঋণের কিস্তি জমা দেওয়াও স্থগিত করা হয়। প্রথম ঘোষণা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারিত ছিল। করোনার অভিঘাত অর্থনীতিতে চলমান থাকার কারণে এ সময় বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এ সময় পর্যন্ত গ্রাহক ইচ্ছা করলে ঋণের কিস্তি দিতে পারবে। তবে না দিলে কোনো গ্রাহক খেলাপি হবে না। ফলে নতুন করে কোনো গ্রাহক আর খেলাপি হচ্ছে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here