রফিকুল ইসলাম রনি: মনে আছে সেই আসমার কথা? কিছুদিন আগে আমার ওয়ালে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম–‘আসমা ও দুটি গরু’। হয়ত অনেকেই দেখেননি বা মনে করতে পারছেন না। মনে করিয়ে দেই। বেশি কিছুদিন আগে মশার কয়েল থেকে গরুর ঘরে আগুন লাগে-সেই গোয়ালে দুটি গরু ছিল। আসমা যান গরু দুটিতে বাঁচাতে। কিন্তু নিজের শরীরে আগুন লেগে অর্ধেক ঝলছে যায়।
দীর্ঘদিন রাজশাহী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটিতে চিকিৎসা নিয়ে পুরাপুরি সুস্থ না হলেও টাকার কথা চিন্তা করে বাড়ী ফিরে যান। তাকে নিয়ে আমার মানবিক স্যাটাস পড়ে সাড়া দেন কানাডা প্রবাসী এনামা আনার জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান Akramul Khan ভাই।
তিনি আসমাকে একটি গাভীসহ গরু কিনে আমার হাতে ৬০ হাজার টাকা পৌছে দেন। একই সাথে সহায়তার হাত বাড়ান তরুণ উদোক্তা Md Masud Jabed ভাই। তিনি একটি বাছুর গরু কিনে দিতে ৩০ হাজার টাকা তুলে দেন আমার হাতে। এ টাকা গুলো নিয়ে আমি ও জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক তাড়াশের সিনিয়র সাংবাদিক এম মামুন হুসাইন, তাড়াশ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছোট ভাই Iqbal Hasan রুবেল, ছোট ভাই Ariful Islam সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি Md Rakib Sarker, আমার দুই ভগ্নিপতি আলতাব হোসেন ও আমিরুল মিলে স্থানীয় হাট থেকে দেশী জাতের গাভীসহ গরুটি ৪৭ হাজার, একটি ষাঁড় বাছুর ২৭ হাজার টাকায় ক্রয় করি।
গতকাল মঙ্গলবার আসমার বাড়ীতে গিয়ে তুলে দেই তার হাতে। আসমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যখন ছিলেন, তখনও তার কাছে গেছি দেখতে-সে সময়ও চোখে পানি দেখেছি। গতকালও তার চোখে পানি দেখলাম। কিন্তু সে পানি কোন কষ্টের পানি না। আনন্দের অশ্রু। গরু হস্তান্তরের সময় আমার জন্মদাতা পিতা-মাতাসহ তাড়াশ রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্টাতা সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক এম মামুন হুসাইন, স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকতারুজ্জামান, আমার শিক্ষক রঘুনিলী মঙ্গলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক বাবলু, ফরিদুল ইসলামসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিবর্গ।
গরু ক্রয় এবং ভটভডিতে করে বাড়ী পর্যন্ত অানা পর্যন্ত মোট খরচ ৮১ হাজার ৭৫০ টাকা। বাকী ৮ হাজার ২৫০ টাকার গরুর ঘরের টিন কেনার জন্য তুলে দিয়েছি আসমা ও তার মেয়ের হাতে। আসমার একটা মেয়ে অনার্স পড়ুয়া মেধাবী ছাত্রী। জমি-জমা নেই। গরু দুটিই ছিল তার সম্বল। আমি সাধ্যমতো চিকিৎসার সময় সহায়তা করেছিলাম। আর দুজন মহত ব্যক্তির কারণে আসমার ঘরে তিনটি গরু ও একটি ছাগল তুলে দিতে পেরেছি।