কে. এম.রুবেল, ফরিদপুর : ধারাবাহিক ভাবে শুস্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থরের পানি নেমে যাওয়ায় বোরো ধানের আবাদ করে আর্থিক লোকশানের মুখে পড়ে ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরা, তাই এ ধানের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
গত কয়েক বছরে জেলার কৃষি বিভাগের আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বিশ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ কমেছে।
বোরো ধানে চাষাবাদ সম্পর্ন্ন সেচ নির্ভর হওয়া ছাড়াও শ্রমিক খরচ, ভাল কির্টনাশক এবং সারের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেশি, অন্যদিকে উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় প্রতি বছরই ফরিদপুর অঞ্চলে এই ধানের চাষাবাদ কমেছে।
ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায়, ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় ২০১০-১১ সালে জেলা বোরো ধানের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ৩৯ হাজার ৪১৭ হেক্টর, এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার ছয় হেক্টর। ২০১১-১২ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৬ হাজার ৭৮৬ হেক্টর, আবাদ হয়ে ছিলো ৩৬ হাজার ৮২ হেক্টর।
২০১২-১৩ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৫ হাজার ২২৫ হেক্টর, আবাদ হয়েছিলো ২৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর। ২০১৩-১৪ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৮ হাজার ২২৮ হেক্টর, আবাদ হয়ে ছিলো ২৬ হাজার হেক্টর। ২০১৪-১৫ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৬ হাজার ৯১৬ হেক্টর, আবাদ হয়ে ছিলো ২৫ হাজার হেক্টর ।
২০১৫-১৬ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৫ হাজার ২৯১ হেক্টর, আবাদ হয়ে ছিলো ২২ হাজার হেক্টর, ২০১৬-১৭ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৫৩৮৭ হেক্টর এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৯১ হেক্টর এবং চলতি মৌসুমে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ২৭ হাজার হেক্টর, সেখানে আবাদ হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে।
বোরো চাষে এই ধসের কারন চাষীরা জানালেন, গত কয়েক বছর আগে সেচ মেশিন দিয়ে যে পরিমান পানি উত্তোলন করা যেতো ঘন্টায়। এখন সেখানে তিন ঘন্টায়ও সেই পরিমান পানি তোলা যায় না। আর বোরো ধান চাষ শুধু সেচ নির্ভর, আর সেচ কাজের জ্বালানির দান, শ্রমিক খরচ অধিক হওয়া অন্যদিকে উৎপাদিত এ ধানের দাম কাঙ্খিত না হওয়া এমনটি হয়েছে।
তারা জানালেন, বোরো বাদ দিয়ে আমরা এখন অন্য ফসলের দিকে ঝুকছি। এই মৌসুমে গম, মুশুরী, চাষা বেড়েছে।
কৃষিবিদ আবুল বাশার মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার ফরিদপুর সদর, বলেন, এই মৌসুমে ধান করতে গেলে সম্পন্ন সেচের পানির উপর নির্ভর করতে হয়, কিন্তু দিন কি দিন পানির স্তর নেমে যাচ্ছে, এটা অবশ্যই কৃষির জন্য শংকার কথা । তিনি বলেন, আমরা উচ্চ পর্যায়ের ব্যাক্তিদের বলার চেষ্টা করছি এই মৌসুমে বিকল্প ব্যবস্থ্ার করা বিষয়ে।