রোজার আগে বেড়েছে যেসব পণ্যের চাহিদা

0
488

রমজনকে সামনে রেখে রোজাকেন্দ্রিক পণ্যের পোশাকের এবং বিভিন্ন উপকরণের চাহিদা বেড়ে গেছে। বাজারে বাড়ছে ভীড়। ক্রেতা ও বিক্রেতারা রমজানের ভোগান্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে এখনই সেরে নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় কেনাকাটা। রমজানকে সামনে রেখে ক্রেতার আর বিক্রেতার চাহিদার কথায় বাজারে কোন কোন পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে তা স্পষ্ট জানা গেছে। কি কি প্রয়োজন রমজানের এবং কি কি বেশি বিক্রি হচ্ছে বাজারে তার চিত্র জন্যে তুলে ধলা হলো-

জায়নামাজ:

জায়নামাজ বিক্রি বেড়েছে। দেশে জায়নামাজ তৈরি হলেও মানসম্পন্ন নয় বলে আমদানি করাগুলোর চাহিদাই বেশি। তুরস্ক থেকে আমদানি করা জায়নামাজ ভালো চলে। এগুলোর দাম ২৫০ থেকে শুরু করে চার হাজার টাকার মধ্যে। চাহিদায় দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তানের জায়নামাজ। দাম ৩২০ থেকে ৮০০ টাকা। চীনে তৈরি জায়নামাজও পাওয়া যায়, ২৫০ থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। রমজানের আগে কম্পাসযুক্ত জায়নামাজের চাহিদা বাড়ে বেশ। পাতলা হওয়ায় পকেটেই পুরে ফেলা যায় এই জায়নামাজ। কম্পাসের মাধ্যমে কেবলা নির্ণয় সহজ হয় বলে ব্যবহার করা যায় ভ্রমণকালেও। মানভেদে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে ২২০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে।

কোরআন শরিফ

দেশের অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কোরআন শরিফ ছাপায়। বাইরের দেশ থেকেও আসে অনেক। দেশে তৈরি কোরআন শরিফের মান ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে দামে পার্থক্য রয়েছে। ইংরেজি অনুবাদসহ কোরআন শরিফের দাম এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। সাদা কাগজে ছাপা বাংলা উচ্চারণসহ হলে দাম ৩৫০ থেকে ৯০০ টাকা। আর্টপেপারে ছাপার দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা। পকেটে রাখা যায় এমন কোরআন শরিফও পাওয়া যায়, দাম ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে।

বয়স্কদের চোখে দেখতে সমস্যা হয় বলে হরফ (ফন্ট) বড় করে কিছু কোরআন শরিফ ছাপানো হয়। এগুলো ছাপতে কাগজ বেশি লাগে, তাই দামও সাধারণের তুলনায় কিছুটা বেশি। ৮০০ টাকা থেকে শুরু।

টুপি

দেশি টুপির পাশাপাশি বাহারি নকশা আর আকৃতির বিদেশি টুপিও পাওয়া যাচ্ছে দোকানে। নকশার সঙ্গে মিল রেখে এসব টুপির চমকপ্রদ সব নাম দিয়েছেন বিক্রেতারা।

দোকান ঘুরে দেখা গেল চীনা টুপি ৬০ থেকে ২৫০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ১২০ থেকে ৬৫০ টাকা, ভারতীয় টুপি ৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, তুর্কি টুপি ১৫০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ইদানীং থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকেও টুপি আমদানি হচ্ছে বলে জানান অনেক দোকানি। এগুলোর দাম ৪০০ থেকে হাজার টাকার মধ্যে। দেশে তৈরি সাধারণ টুপি ১২০ থেকে শুরু করে ২৫০ টাকায় পাওয়া যায়। আর নকশা করে বোনা টুপি আসে বগুড়া, দিনাজপুর ও চট্টগ্রাম থেকে। এগুলোর দাম বেশি। নকশাভেদে ৮০০ থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকার মতো।

পাকিস্তানি টুপির মধ্যে জিন্নাহ টুপি, আসিফ জারদারি ও বোগিস পাওয়া যায় গড়ে ৭০০ টাকায়। চীনের তৈরি ওয়ানি সাড়ে ৫০০, ভারতের গুজরাটি ২৫০ থেকে ৩৫০, আর পাঠানের দাম সাড়ে ৪০০ টাকা।

ছোট পুঁতির সঙ্গে বিভিন্ন রঙের সুতার কাজ করা প্রতিটি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

তসবি

ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে রমজান মানে বিশেষ শোকর গোজারের মাস। মসজিদে তো বটেই, চলতি পথেও অনেকে তসবি হাতে ইবাদত-বন্দেগি করেন। সাধারণ সময়ের তুলনায় তাই রমজানের আগে তসবির চাহিদা বাড়ে কয়েক গুণ।

রাজধানীতে তসবি পাওয়ার সবচেয়ে ভালো জায়গা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেট। এখানকার ২৯ নম্বর দোকান জাহানারা আতর হাউসের স্বত্বাধিকারী কাজী রাসেল জানান, ধরন ও মান অনুযায়ী তসবির দাম নির্ধারিত হয়। তাঁর দোকানে ২০ টাকার তসবি যেমন আছে, তেমনি পাওয়া যায় দুই হাজার ৫০০ টাকারও।

আকিক পাথরের তৈরি ৩৩ দানার দাম ৭০০ এবং ১০০ দানার দাম ৯৫০ টাকা। শমসেতারা পাথরের তৈরি ৩৩ দানার ৭০০ টাকা ও ১০০ দানার এক হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। পাথরের তৈরি অন্য কিছু তসবি ৭০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশের তৈরি ছাড়াও রয়েছে পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক থেকে আনা তসবি। অন্যদিকে বাটন চেপে জিকির করা যায় এমন ডিজিটাল তসবিও পাওয়া যায়। দাম ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। বিভিন্ন দোকান ছাড়াও ই-কমার্স সাইটে তসবিগুলো পাওয়া যায়। আরো পাওয়া যায় ট্যালি কাউন্টার ডিজিটাল তসবি, দাম ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here