নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষের সব সাক্ষীকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজির করাতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ফাতেমা খানম নীলা এই মামলায় কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে নিতে সময়ের আবেদন করেন। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা মৌখিকভাবে সাক্ষী শেষ করার আবেদন করেন। এসময় শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, দুদক গত তিনটি ধার্য তারিখে সাক্ষী হাজির করেনি। এভাবে তারা আসামিদের হয়রানি করছে। তাই মামলায় সাক্ষী সমাপ্ত করে দ্রুত রায় দেওয়া হোক। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সব সাক্ষীতে তলব করেছেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত বছরের ১৯ মার্চ একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
২০০৭ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেছিলেন। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। বাকিরা হলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেয়। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।