পাল্টা শর্ত দিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

0
5

দেশের মাটিতে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চান বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান। টাইগার ক্রিকেটে অবশ্য মাঠ থেকে বিদায়ের নজির খুব একটা নেই।

সাকিবের জন্য বিষয়টি যে খুব একটা সহজ নয় তা তিনি নিজেও জানেন। বিশেষ করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সাধারণের চোখে অবস্থান বদলেছে সাকিবের। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকেই আত্মগোপনে আছেন, অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

ঢাকার আদাবরে গার্মেন্টসকর্মী রুবেলের হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে সাকিবের নামে। সেই সূত্রে সাকিব জানিয়েছিলেন, দেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলেই অক্টোবরে মিরপুরে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে নামবেন তিনি। শুধু তাই নয়, খেলা শেষ করে নিরাপদে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তাটাও চেয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ পুরো ব্যাপারটি ঠেলে দিয়েছেন সরকারের কোর্টে। তিনি বলেছেন সাকিবের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি বোর্ড দেখবে না।

এবার সাকিবের নিরাপত্তা ইস্যুতে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

রোববার শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে গ্রামীণফোনের লভ্যাংশের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুটি, এটি মনে রাখতে হবে। তিনি একজন খেলোয়াড়। সে হিসেবে তার যতটা নিরাপত্তা দেয়া দরকার সেটা দেয়া হবে। অপরদিকে তিনি একজন রাজনীতিবিদও। আওয়ামী লীগের হয়ে রাজনীতি করেছেন। মানুষের মধ্যে এই দুই পরিচয় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। এখন খেলোয়াড় হিসেবে আমাদের একজন খেলোয়াড়কে যতটুকু নিরাপত্তা দেয়ার দরকার ততটুকু আমরা দেব।’

এসময় সাকিবের প্রতি অনেকটা শর্ত আরোপের সুরে উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলে নিজেকেই তার সংশোধন করতে হবে। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান সাকিবকেই স্পষ্ট করতে হবে। আসিফ মাহমুদ যোগ করেন, ‘রাষ্ট্রের জায়গা থেকে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককেই নিরাপত্তা দিতে বাধ্য এবং সেটা আমরা অবশ্যই করব।’

‘তার বিরুদ্ধে যে হত্যা মামলা হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই বলেছি এবং আইন মন্ত্রণালয়ও বলেছে, তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে প্রাথমিকভাবেই নাম বাদ দেয়া হবে।’

উপদেষ্টা আসিফ বলেন, তার (সাকিব আল হাসান) রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলে…। মনে করুন, আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন গানম্যান থাকেন। আমার উপরে যদি দেশের ১৬ কোটি জনগণের ক্ষোভ থাকে, তাহলে তারা আমাকে কী নিরাপত্তা দেবেন?

তিনি বলেন, ‘জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা আমাকে রিডিউস করতে (কমাতে) হবে আমার কথা দিয়ে। আমার মনে হয়, তার নিজের জায়গা পরিষ্কার করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক জায়গা থেকে, তার যে রাজনৈতিক অবস্থান, তা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। অলরেডি মাশরাফি বিন মুর্তজা কথা বলেছেন।’

এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাও টেনে আনেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘শেখ হাসিনাকেও নিরাপত্তা দেওয়া যায়নি, তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। সে জায়গায় রাজনৈতিক বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব আমরা পালন করি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here