চট্টগ্রাম বন্দরে কাজ শুরু করল নৌ-বাহিনীর ড্রাইডক

0
28

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড। এটি নৌ-বাহিনী পরিচালিত একটি সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। রোববার (৬ জুলাই) মধ্যরাত থেকে প্রতিষ্ঠানটি এনসিটি টার্মিনাল বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করে। ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম) তথা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৬ মাসের কার্যাদেশ পেয়েছে ড্রাইডক লিমিটেড।

এর আগে ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টায় সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে বন্দরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়৷ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় বিতর্কিত সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করেনি বন্দর কতৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে বন্দরের এনসিটি টার্মিনালে দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় রাজত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেকের বিদায়ঘণ্টা বেজে যায়।

যদিও এনসিটি থেকে সাইফ পাওয়ারটেককে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আগে চূড়ান্ত হয়েছিল। প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বন্দর কতৃপক্ষ নিজেই টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। পরবর্তীতে সরকার নৌ-বাহিনীকে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে আইনি কিছুটা জটিলতা থাকায় সরাসরি নৌ-বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাইডককে এনসিটির দায়িত্ব দেয় সরকার।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, এনসিটিতে ড্রাইডক তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আগের অপারেটরের সঙ্গে যেসব শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করত, তারাই এনসিটি পরিচালনার সঙ্গে থাকছে, শুধু ব্যবস্থাপনার বদল হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমানে সবচেয়ে বড় টার্মিনাল এনসিটি। প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা এই টার্মিনালে একসঙ্গে ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচটি জাহাজ ভেড়ানো যায়। এই টার্মিনালে চারটি জেটি রয়েছে এবং বন্দরের মোট কনটেইনারের প্রায় অর্ধেক হ্যান্ডলিং করা হয় এই টার্মিনাল দিয়ে। এটিতে ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটিজ হিসেবে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত ইয়ার্ড। টার্মিনালে বন্দরের মালিকানাধীন জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠা-নামা করার জন্য রয়েছে ১৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেন। এর পাশাপাশি কনটেইনার স্থানান্তরের যত যন্ত্র দরকার, সবই আছে টার্মিনালটিতে।

বন্দর সংশ্লিষ্ট একজন জানান, এই টার্মিনালে সব বিনিয়োগ করেছে বন্দর কতৃপক্ষ। আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবহার করে কোনো প্রকার বিনিয়োগ ছাড়াই টার্মিনালটি থেকে সাইফ পাওয়ার টেক হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। দেশি কিংবা বিদেশি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে তেমন সুযোগ দেওয়া হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এনসিটি থেকে বিতর্কিত সাইফ পাওয়ারটেককে সরিয়ে দিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তখন থেকে বন্দর বিদেশিদের হাতে না দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন পক্ষ সরব হয়। তবে তাদের দাবির আড়ালে সাইফ পাওয়ারটেককে রক্ষা করতেই এই আন্দোলন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে অনেকেই। আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যেই নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করেন। এতে টাকা ঢেলে বন্দর অচলের জন্য সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন নির্দেশনা দেন বলে অভিযোগ করেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here