কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই মামলায় জারি করা রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিষ্পত্তি করে সোমবার (২ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর আগে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, মুরাদ রেজা। খালেদার পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী, মো. আতিকুর রহমান ও এহসানুর রহমান।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার এ দুই মামলায় গত ২৮ মে খালেদা জিয়ার ছয় মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরেরদিন ২৯ মে জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে, জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ৩১ মে নির্ধারিত দিনে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন জামিন স্থগিত করা হয় এবং মামলাটি শুনানির জন্য ২৪ জুন দিন ধার্য করা হয়। পরে ২৪ জুন শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।
দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। সেই থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ওই মামলায় আপিলের পর খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। যেটি গত ১৭ মে বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
খালেদা জিয়াকে অন্তত আরও ছয়টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানান তার আইনজীবীরা। তাই কারামুক্তির জন্য সব মামলায় তাকে জামিন পেতে হবে। এ মামলাগুলোর মধ্যে কুমিল্লায় তিনটি ও নড়াইলে একটি এবং বাকি দুটি ঢাকার। এসব মামলার মধ্যে কুমিল্লার এই মামলাটিও রয়েছে।
তবে, এরই মাঝে কুমিল্লার নাশকতার একটি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া খালেদার জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এখন মুক্তি পেতে হলে আরও পাঁচটি মামলায় জামিন পেতে হবে।