স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির দাবিতে দশম দিনেও চলছে আমরণ অনশন কর্মসূচি। দাবি পূরণে দ্বিতীয় দফায় শুরু করা এ আন্দোলনে ১৯৩ জন অসুস্থ হয়ে পরেছে এবং ২৩ জন কে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তী করানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশ্বে অবস্থান নিয়েছেন নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্চারীরা। বুধবার ১০টায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষকরা অনশনে বসে কেউ শুয়ে পড়েছেন। অর্ধশতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী অনশনের কারণে দুর্বল হয়ে পড়ায় স্যালাইন লাগানো হয়েছে।
তবে হাসপাতাল থেকে আন্দোলনে ফিরেছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদু্ন্নবী ডলার।
তিনি জানান, আমাদের আন্দোলনের ২৫ দিন। আমরণ অনশনের ১০ম দিন চলছে আজ। আমি নিজেই গুরুতর অসুস্থ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। সেখান থেকে গত কাল ফিরেছি। ১৯৩ জন অসুস্থ হয়েছে গতকাল রাত পর্যন্ত। তাদের কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্যালাইন লাগানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি তো ন্যায্য। এই ন্যায্য দাবি প্রধানমন্ত্রী মেনে নেয়ায় এর আগের আন্দোলন আমরা স্তফা দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আশাহত করা হয়েছে। বাজেটে আমাদের আশার প্রতিফলন ঘটে নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ফের আন্দোলনে নেমেছি। আশায় আছি। ন্যায্য দাবি সরকার মেনে নেবে।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দুটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আশা করছি ২/১ দিনের মধ্যে আমরা ভাল সংবাদ পাবো। নইলে আন্দোলন আমাদের চলবে।
দাবি দুটি হলো সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় এনে আংশিক বেতন চালু করে পরবর্তী অর্থবছরে তা সমন্বয় করা। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত না হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য এমপিওভুক্তির পর তিন বছর সময় দেয়া।
অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা বলেন, গত ১২ জুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) এর জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারি করা হয়েছে। এই নীতিমালা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদান অনুমতি ও স্বীকৃতির সময় আরোপিত শর্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
চলতি ২০১৮-১৯ বাজেটে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দের কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। যার ফলে নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীর অত্যন্ত হতাশ ও আশাহত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে সারাদেশের নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তি হলে সকলেই সন্তুষ্ট চিত্তে বাড়ি ফিরে যাবে।