Home জাতীয় যে ছেলের হাতে উঠেছিল সোনা, সে হাতেই ইটের বোঝা!
নয় ফুট বাই পাঁচ ফুটের ঘরটায় বাস করে চারজনের পরিবার। তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এক প্রতিভা। যার হাত ধরে স্পেশাল অলিম্পিক থেকে ভারতের ঘরে এসেছিল জোড়া সোনা। তার পরেরটা শুধুই হারিয়ে যাওয়া। যে হাতে সোনা উঠেছিল, সেই হাতেই ইটের বোঝা।
১৭ বছরের রাজবীরকে হয়তো কারও মনে নেই। লুধিয়ানার রাজবীর সিংহ। ২০১৫-এ চণ্ডীগড়ে যখন ফিরেছিলেন সুদূর লস এঞ্জেলেস থেকে পদক জিতে; তখন শুভেচ্ছার জোয়ারে ভেসে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেরটা শুধুই শূন্যতা।
স্বর্ণপদক এর ছবি ফলাফল
এরপর অনেকটা সময় গড়িয়ে গেছে। আসতে আসতে রাজবীরকে ভুলে গেছে সবাই। রাজবীরও আর এগোতে পারেননি। এ মুহূর্তে রীতিমতো অর্থকষ্টের মধ্যে হুইল চেয়ার ছেড়ে কোনোরকমে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে সোনার ছেলেকে।
২০১৫-এ স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ড সামার গেমসে এক কিলোমিটার ও দু’কিলোমিটার সাইক্লিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরেছিলেন তিনি। তারপর বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বাবার সঙ্গে হাত লাগাতে হয় লেবারের কাজে।
তৎকালীন পাঞ্জাব সরকারের তরফে ১৫ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছিল। এর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল আরও ১ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এর সঙ্গে আরো ১০ লাখ টাকার বন্ডও দেয়া হয়, যা এখনও হাতে পাননি রাজবীর।
সম্প্রতি পাঞ্জাব সরকার এ খবর পেলে জানায়, তাদের এ সম্পর্কে কোনও ধারনা ছিল না।বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার আগেই এ প্রতিশ্রুতিগুলো দেয়া হয়েছিল। পাঞ্জাবের ক্রীড়াবিদদের জন্য যেভাবে সরকার কাজ করে সেভাবেই ওর জন্যও করা হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
রাজবীরের বাবা বলবীর সিংহ জানিয়েছেন, ‘আমার ছেলে আমার কাছে সব সময়ই খুব স্পেশাল। ও হতাশ। এ অবস্থা কারও হওয়া ঠিক না।’
রাজবীরের কথা জানার পর তার পাশে এসে দাঁড়ায় স্থানীয় এনজিও’র কর্ণধার গুরপ্রীত সিংহ। নিয়ে যান নিজের এনজিওতে। যেখানে বয়স্ক লোকদের দেখাশোনা করতেন রাজবীর। তাকে একটি সাইকেলও দেন গুরপ্রীত।
তার চিকিৎসারও দায়িত্ব নেন তিনি। অন্যদের থেকেও সাহায্য চান রাজবীরের জন্য কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। কিন্তু লড়ে যাচ্ছেন গুরপ্রীত, যাতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া টাকাগুলো পেয়ে যান তারা।