দেশে ফিরলেন মাশরাফিরা

0
816

টুর্নামেন্টের শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মাঝপথে সাকিব আল হাসানকে। অনেকেই ছিলেন ইনজুরি আক্রান্ত। সেই দল নিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা। সেই পথে বিদায় করেছে ক্রিকেট পরাশক্তি শ্রীলংকা, পাকিস্তান এবং নব্য শক্তি আফগানিস্তানকে। শেষ পর্যন্ত রোহিত বাহিনীর কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে তারা।

আরেকটি ফাইনাল, আবারো শেষ বল, ফের স্বপ্নভঙ্গ। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে সেই হারের তেতো স্বাদ। শুক্রবার এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ বলের ফয়সালায় ভারতের কাছে হেরে তৃতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের।

তবে ফাইনালি যে লড়াই করেছে টাইগাররা, তাতে শনিবার রাতে মাথা উঁচু করেই দেশে ফিরলেন তারা। রাত সাড়ে ১১টায় মাশরাফিদের বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে তাদের শুভেচ্ছা জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

তবে ২২২ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়ে ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে যেভাবে লড়েছে তা নজর কেড়েছে সবার। প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজছেন মাশরাফি ব্রিগেড। তাদের বন্দনায় বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনের সাবেক ও বর্তমান রথী-মহারথীরা। কিন্তু দুধের স্বাদ কী ঘোলে মিটবে? সেই প্রশ্নটা শেষ পর্যন্ত থেকেই যাচ্ছে। এ নিয়ে তৃতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের।

এর আগে ২০১২ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটে এবং ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে টাইগাররা। প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানের হারে বেদনাদায়ক চিত্রনাট্য রচিত হয়। আর সবশেষ টি-টোয়েন্টি সংষ্করণে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরে দ্বিতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হয়। এবারো তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

আম্পিয়ার লিটনের সেই আউট টা না দিলে বাংলাদেশ ই জিততো : পাপন

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আগের খেলাগুলোতে দেখেছি মিডল অর্ডারই সবসময় রান দিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই ম্যাচটা এত সুন্দরভাবে শুরু হওয়ার পরেও এভাবে কলাপস করবে আসলে ভাবতেও পারিনি। ২২২ রানের পুঁজি নিয়ে যেভাবে ফাইটটা হয়েছে এরচেয়ে বেশি মজাদার ফাইনাল হতে পারে না।

ভালো শুরুর পরও ২২২ রানে গুটিয়ে যাওয়াটা হতাশা জনক। এমনটাই মন্তব্য করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে এখানেও ইতিবাচক দিক দেখছেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তার মতে আগের তুলনায় উন্নতি হয়েছে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। সব মিলিয়ে ফাইনালটা দারুন উপভোগ্য ছিল এবং টাইগাররা ভালো খেলেছে বলে মনে করেছেন টাইহগার ক্রিকেটের এই অভিভাবক।

পাপন আরো বলেন, ‘বার বার কেনো জানি ভারতের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে যেয়ে হেরে যাচ্ছি। তবে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই বাংলাদেশ ভালো খেলেছে।’

কেন, ঠেকানো কি একেবারেই অসম্ভব? এই টুর্নামেন্টের স্মৃতিই কি অন্য কথা বলছে না! আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচটা জিততে শেষ ওভারে ৮ রান লাগত আফগানদের। মোস্তাফিজুর রহমান দিয়েছিলেন মাত্র ৪ রান। ফাইনালে এটি করতে পারলেই তো হয়ে যেত। মোস্তাফিজুর তাহলে কেন শেষ ওভারটা করলেন না?

কিন্তু শেষ ওভারটা যে করতে হলো মাহমুদউল্লাহকে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল সৌম্য সরকারের কথা। বল হাতেও নিয়েছিলেন সৌম্য। পরে মাশরাফি মত বদলে মাহমুদউল্লাহকে ডাকেন। সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ কেউই নিয়মিত বোলার নন। নিয়মিত বোলারদের মধ্যে মোস্তাফিজ, রুবেল ও নাজমুলের কোটা তখন শেষ। শেষ মাশরাফিরও। ওভার ছিল শুধু মেহেদী হাসান মিরাজের। এই ম্যাচেই যিনি বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাটিং ও বোলিং দুটিই ওপেন করার প্রথম কীর্তি গড়েছেন। মিরাজের কথা কেন ভাবলেন না মাশরাফি?

৪ ওভারে ২৭ রান দিয়েছেন বললে যা বোঝায়, মিরাজ আসলে এর চেয়েও খারাপ বোলিং করেছেন এ দিন। যে কারণে মাশরাফি আর শেষ ওভারে আনার সাহস পাননি। শুধু মিরাজ নন, দলের তিন স্পিনারের কাছ থেকেই আরেকটু বেশি আশা করেছিলেন অধিনায়ক। সেটি না পাওয়ায় হতাশাটাও গোপন করলেন না। সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘প্রথম ইনিংসে বল যেভাবে স্পিন করেছে, তাতে আমাদের স্পিনারদের আরও আশা করেছিলাম। মিরাজ এই টুর্নামেন্টে সেরা বোলার, রিয়াদও (মাহমুদউল্লাহ) গত ম্যাচে খুব ভালো বোলিং করেছেন। আজ তারা আরেকটু ভালো করতে পারত।’

স্পিনাররা ভালো করেনি বলেই শেষের ওভারটা মোস্তাফিজ বা রুবেলকে দিয়ে করাতে পারেননি মাশরাফি, ‘ওদের যখন সাড়ে ৫ রান করে লাগে, তখন আমি মিরাজকে এনেছি। রিয়াদকে এনেছি। তখন কেউ যদি দুইটা ওভারও ভালো বোলিং করে দিত, তাহলে খুব ভালো হতো। একজন স্পিনার ভালো করলেও ৪৬ নম্বর ওভার থেকে আমি রুবেল ও মোস্তাফিজকে শেষ পর্যন্ত বোলিং করাতে পারতাম। তাহলে হয়তো ভারতের কাজটা অনেক কঠিন হতো। কারণ, ওদের বোলিংয়ে অনেক ভ্যারিয়েশন আছে।’

ম্যাচটা হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে বাধ্য হয়েই রুবেল ও মোস্তাফিজকে আগেই ব্যবহার করে ফেলতে হয়েছে। শেষ ওভারে যে কারণে আর তাঁদের কাউকে পেলেন না মাশরাফি। সৌম্যর কথা ভেবেও শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ কেন? কারণ হিসেবে বিপিএলে একাধিক ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর শেষ ওভারের বীরত্বের কথা বললেন মাশরাফি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here