খালিদ মারুফ: আজ যাদের গণভবনে ডাকা হয়েছে তাদের হস্তাক্ষর পরীক্ষা করা হোক। দুশ শব্দের প্যারাগ্রাফ বাংলায় ও ইংরেজিতে লিখতে দেওয়া হোক। বাংলা শব্দের উচ্চারণে সুস্পষ্টতা-আঞ্চলিকতা দোষে দুষ্ট নয় এমন ছেলেদের আলাদা করা হোক।
দাপ্তরিক পত্রাদি-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি লিখতে দেওয়া হোক। বাক্য-বানান, যতি-চিহ্ন, রীতি-পদ্ধতি পরীক্ষা শেষে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে তবেই নেতা নির্বাচন করা হোক। একটি আদর্শিক সংগ্রাম পরিচালনার জন্য লক্ষ-লক্ষ কর্মীর দরকার নেই। রাজনীতি একটি বিশেষায়ীত আচরণ বৈ অন্য কিছু নয়।
কবিতা-সাহিত্য বোঝে, এগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করে, এমন ছেলেদের নেতৃত্বে আনা হোক। জামাতি আমলে টিএসসি কেন্দ্রীক সবগুলো সংগঠনকে ছাত্রদল শিবিরের হাতে তুলে দিয়েছিল। গত একদশকে ছাত্রলীগ সেগুলো পুনরুদ্ধার করা দূরে থাক, ওগুলোর ধারে-কাছেও যায়নি।
ডাকসু চালু থাকাকালীন ছাত্রসংগঠনই কবিতা-সাহিত্যের নিয়মিত আয়োজন- অনুষ্ঠান করেছে, ক্যাম্পাসে কবিতা-সাহিত্য করে এমন ছেলেদের ডেকে সংবর্ধনা দিয়েছে, এমনকি ছাত্রদলের নেতারাও এগুলো করেছে। পক্ষান্তরে গত একদশকে ছাত্রলীগের কাছে কবিরা হয়েছে নাস্তানাবুদ, হাস্যস্পদ। এটা নিদারুণ পরিতাপের!
মনে রাখতে হবে, ছাত্রলীগ এদেশের কৃষকের সন্তানেরাই করেছে। অধিকতর সম্পন্ন ও সুবিধাপ্রাপ্ত ঘরের ছেলেরা করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্য। তারা খুব সহজেই ছাত্রলীগকে গেঁয় ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করেছে, যে ধারা এখনো অক্ষুণ্ন আছে।
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ, সবগুলো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রক্ত ঝরিয়েছে ছাত্রলীগ আর ‘পূর্ব-পাকিস্তানে ছাত্র আন্দোলন’সহ বিরাট-বিরাট পুস্তক রচনা করেছে ছাত্র ইউনিয়ন ও অন্যান্যরা। পাকিস্তান আমল-মুক্তিযুদ্ধ বাদ দিয়ে শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের খতিয়ানটাও যদি দেখা হয়, তাহলে দেখা যাবে কী পরিমাণ ছাত্রলীগ কর্মী প্রাণ হারিয়েছে প্রতিক্রিয়াশীল খুনি চক্রের হাতে।
অথচ ঐসব বই খুললে সেখানে কেবল ছাত্রলীগের নামে কুৎসাগুলোই পাওয়া যায়, ছাত্রলীগের শহীদদের তালিকাটাও তারা অন্তর্ভুক্ত করে নাই। এই জায়গাগুলোতে নজর দিতে হবে। কী বই পড়ে তারা টেবিল-বিতর্কে তোমাকে হারিয়ে সিটি বাজায়, ওগুলো তোমরা পড়ো না কেন?
একবার বলেছিলাম, ‘একহাতে কবিতার খাতা, অন্য হাতে প্রতিরোধের স্টেনগান; ছাত্রলীগ মানে এই।’ আমি চাই ছাত্রলীগ সেভাবেই পুনর্গঠিত হোক।