রুপির বিপরীতে টাকার মান বাড়ানোর জন্য ডলারের বিপরীতে রুপির পতন দায়ী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এক মাসের ব্যবধানে রুপির বিপরীতে টাকার মান বেড়েছে ১২ শতাংশ। চলতি বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকেও ভারতীয় মুদ্রা ১০০ রুপি কিনতে ব্যয় হতো ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। বর্তমানে ১০০ রুপি কিনতে লাগছে মাত্র ১১০ টাকা।
রুপির বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে পণ্য আমদানির খরচ কমছে। ভারত থেকে ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে বর্তমানে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। একমাস আগেও এই পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের গুনতে হতো চার লাখ টাকা।
তবে এই সুযোগে ভারতীয় পণ্যে বাজার সয়লাব হলে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন দেশীয় ব্যবসায়ীরা। বিনিময় মূল্যের এই অবস্থা রপ্তানি খাতকে নতুন করে প্রতিযোগিতার মুখে ফেলবে।
দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর এক্সপোর্ট ইমপোর্ট গ্রুপের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, বাংলাদেশি টাকার তুলনায় ভারতীয় রুপির মান কমে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা প্রায় ৫০ হাজার টাকা কমে ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন। আগে ভারত থেকে যে পণ্যটি ২০ টাকায় কিনতে হতো, ভারতীয় রুপির মান কমে যাওয়ায় সেটি এখন ১৮ টাকায় কেনা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের হিসাব মতে, বর্তমানে ১০০ ভারতীয় রুপি কিনতে খরচ হচ্ছে ১১০ টাকা। রুপির বিপরীতে টাকার এই শক্তিশালী অবস্থানের কারণ ডলারের সঙ্গে রুপির মান পতন।
গেলো এক বছরে ডলারের বিপরীতে রুপির দর কমেছে সাড়ে ১৩ শতাংশ। আর টাকার দর কমেছে মাত্র ১ শতাংশ। যা বড় সুবিধা এনে দিয়েছে আমদানি বাণিজ্যে। কেননা বছরে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য আসে ভারত থেকে।
পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ শুধু ভারতে থেকে আমদানিই করে না, রফতানিও করে। দেশটিতে গত একবছরে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১২৫ শতাংশ। সিমেন্ট থেকে শুরু করে খাদ্য পণ্যের বাজারও দখল করছে বাংলাদেশ। যদিও পরিমাণে তা সামান্য। প্রতিবছর রফতানি হয় মাত্র ৯০ কোটি ডলারের খাদ্য পণ্য।
এর বাইরেও গত একবছরে ২০ লাখ বাংলাদেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন। টাকার বিপরীতে রুপির এই পতন ভ্রমণকে সাশ্রয়ী করেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশিরা।
আরো পড়ুনঃ
জেনেনিন কেন দরিদ্র দেশে শিশু জন্মগ্রহণ বেশি হয়.?
দরিদ্র দেশের কোনো দম্পতির ঘরে পাঁচ থেকে ছয়টি শিশু জন্মগ্রহণ করে গড়ে। এসব অনেক সময় বেশি সন্তানকে সংসারের সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়ে থাকে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে শিশুকে সংসারের সচ্ছলতার জন্য কাজও করতে হয়। পূর্ব আফ্রিকার সোমালিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এখানে।
বিশ্বের প্রতিটি নারী নাকি গড়ে আড়াইজন শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু ‘দরিদ্র’ দেশগুলোতে শিশু জন্মের হার ধনী দেশগুলোর তুলনায় বেশি কেন? হ্যাঁ, বিভিন্ন দেশে শিশু জন্মের হার সম্পর্কে ডয়েচে ভেলের একটি প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের দেয়া কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
দরিদ্র দেশগুলোতে একজন নারী কয়টি সন্তানের জন্ম দেবে, তা নির্ভর করে পুরুষের ওপর। বিয়ে, চাকরি বা সন্তানের জন্ম দেয়ার মতো কোনো সিদ্ধান্তই নেয়ার অধিকার নেই নারীদের। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর উদাহরণ দিয়েছে। তারা আরও বলেছেন, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীদের সন্তান বেশি হয়ে থাকে, যা আসলে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এ ছাড়া অনেক দরিদ্র দেশের নারীদের গর্ভনিরোধক বা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। স্কুল, ডাক্তার বা কোথাও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় না, অর্থাৎ বহু নারী না চাইলেও তারা গর্ভবতী হচ্ছেন।
জনসংখ্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মারাইকে ড্যোরিং বলেন, বিশ্বের ৪৩টি দেশের নারীরা গড়ে চারটি সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। আর এই দেশগুলোর মধ্যে ৩৮টি-ই আফ্রিকায়।
অন্যদিকে জার্মানি, আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশের নারীরা গড়ে এক বা দুটি সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। এসব দেশে জনসচেতনতা তুলনামূলকভাবে বেশি, সন্তান জন্ম দেয়ার সিদ্ধান্ত নারী নিজেই নিতে পারেন। তাছাড়া শিল্পোন্নত দেশগুলোতে সন্তান জন্মের পরও নারীরা চাকরি করতে চান। এসব দেশের মায়েদের মতে, শুধু বাচ্চা জন্ম দিলেই হবে না, তাদের সুস্থ ও সুন্দর জীবন দেয়ার নিশ্চয়তাও থাকতে হবে।
গত বছর জার্মানিতে মোট ৭৮৫,০০০ শিশুর জন্ম হয়েছে, যা ২০১৬ সালের চেয়ে কিছুটা কম। জার্মানিতে কোন বছর কতজন শিশু জন্ম নেয় এবং কতজন শিশু কখন স্কুলে যাবে, তাদের কতজন শিক্ষকের প্রয়োজন তার একটি হিসেব থাকে। ভবিষ্যতে কতজন মানুষ জার্মানিতে বসবাস করবেন সে হিসাবও করে দেশটির