জহির আমহেদ: সেন্ট্রাল রোড আইডিয়াল কলেজের সামনে থেকে রিকশায় চড়লাম। ঐ রোডে ভয়াবহ জ্যাম যা আগে দেখিনি কখনো। আজ কলেজ স্কুলের ছেলেরা ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে তাই হয়তো এতো জ্যাম। একজন বলছে ডানে যেতে অন্যজন বলছে ডানে যাওয়া যাবে না সবাই বাম দিয়ে ঘুরে আসবে। খুব ভালো কথা। ধীরে ধীরে সবাই একদিন নিয়মে চলে আসবে। দু এক ছাত্র আবার ল্যাব এইডের পিছনে চায়ের দোকানে ফুক ফুক করে সিগারেটে দম নিয়ে আসছে।
আইডিয়াল কলেজের সামনে দিয়ে রাস্তাটা সায়েন্সে ল্যাব আর ল্যাব এইডের পিছনে যে জায়গায় যুক্ত হয় সেখানে লাইন ধরে ট্রাফিক আর থানার পুলিশরা চুপ করে বসে আছে। এর মাঝে আমার রিকশা ড্রাইভার বলছে এইবার সরকার বুঝবে ঠেলা। পুলিশদের দিকে ইংগিত করে বলছে সারাদিন খালি চুরির ধান্ধা এখন বইসা আছো কেন। যাও পারলে ওদেরকে তুলে দাও তো দেখি কেমন পারো। বুঝলাম চাচা মিয়া খুব খুশী ছাত্রদের এমন ট্রাফিক কন্ট্রোলে।
ল্যাব এইড পার হয়ে স্বপ্ন হয়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালের কাছে এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে কড়া করে সবাইকে লাইন ধরে যেতে বলছে। বেশী কড়া হয়ে গেলে নিজেই একটু হেসে দিচ্ছে। বুঝলাম সে কড়া কথায় বলা অভ্যস্ত না। সবাই লাইন দিয়ে আসা শুরু করলো। আমার রিকশা ড্রাইভার খুব খুশী। সেও লাইন ধরলো !!
অল্প রাস্তা লাইন ধরে আসার পর ফাকা পাওয়াতে সে লাইন ভঙ্গ করে ডাবল লাইন করে ফেললো। তার পিছনেরটাও খালি মাঠে ত্রিপল লাইন করে ফেললো। আমি ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আপনি লাইন ভাঙ্গলেন কেনো। সে পিছন ফিরে একটা প্রশস্ত হাসি দিয়ে বললো এদিক তো খালি। আগে যাওয়া যাবে। আমি তখন বললাম আপনারে বললো লাইন ধরতে দুই প্যাডেল মেরেই লাইন ব্রেক করলেন রাস্তা খালি দেখে তাহলে কিভাবে হবে।
এবার সে বললো আমরা নিজেরাই খারাপ। সরকার ছাত্র বা অন্য কেউ আমাদের ঠিক করতে পারবে না। যতক্ষন আমরা নিজেরা ঠিক না হই। তার স্বীকারোক্তি পেয়ে চুপ হলাম। সারাদেশের ঘুনে ধরা সমাজ হুট করে কিভাবে ঠিক হবে। আমাদের ইনকাম অনুযায়ী কতোজন ট্যাক্স দেই। নিজে কতোটা নিয়ম মানি সবক্ষেত্রে। আমরা ফেসবুকে যতটা প্রতিবাদী বাস্তব জীবনে কতোটা করি। হাজার হাজার উদাহরন দেয়া যাবে।
নিরাপদ সড়ক আমিও চাই কারন আমাকেও বাইরে যেতে হয়। আমরা যতদিন নিজে ঠিক না হয়ে অন্যকে দোষ দিবো ততদিন এদেশের উন্নতি হবে না। ভাবতে ভাবতে ২০ মিনিটের রাস্তা এক ঘন্টায় ফিরলাম !!