Home রাজনীতি ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি কুটনৈতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি’
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কুটনৈতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি। দলটি মনে করছে, জোর করে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানুষের মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দল মত নির্বিশেষে প্রত্যেকটি সেক্টর থেকে এগিয়ে আসতে হবে, এগিয়ে আসা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। তেমনি দেশে নিযুক্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠাননের পক্ষ থেকেও সার্বিক বিষয় অনুধাবন করে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, যে পদক্ষেপ বাংলাদেশকে অগ্রসর হতে কাজে দেবে।
বৈঠকে থাকা একাধিক বিএনপির নেতারা প্রিয়.কম কে এমনটাই জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার(৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫ টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হয়। বিকেল ৪টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কূটনৈতিক ও বিএনপি কারও পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বৈঠকে শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই দাবির প্রতি বিএনপির ফের পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের হামলার বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্ণিকাটের ওপর সন্ত্রাসী মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়,দোষিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
বৈঠকের এক পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কে কূটনৈতিকদের অবহিত করেছেন। তাদেরকে জানানো হয়েছে কিভাবে সরকার আদালতকে ব্যবহার করে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি পেতে জামিন নামঞ্জুর করে যাচ্ছে সেই বিষয়টি। আলোচনায় উঠে আসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া তিন সিটি নির্বাচনের নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র। তখন ফের বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, বর্তমান অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে, হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচিনকালিন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। এবং যতদ্রুত সম্ভব খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি ।
বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ব্রেকিংনিউজকে বলেন, কূটনৈতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের আজকের বৈঠক নতুন কিছু না। বিএনপি প্রায় প্রতি মাসে অন্তত তাদের (কূটনৈতিক) সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হচ্ছে। দেশের সর্বশেষ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করছে। সেক্ষেত্রে কূটনৈতিকরাও দেশের নানান বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বৈঠক করা দোষের কিছু না। বৈঠক নিয়ে লুকোচুরি করাও হচ্ছে না। তবে হ্যা, গণমাধ্যমকর্মীদের নানান কারণে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিবেচনায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না, কারণ সবকিছু জানানোটাও শুভ দিক না। যতটুকু প্রয়োজন পড়ে ততটুকু নিশ্চয়ই জানানো হয়ে থাকে। এরমানে এই নয় বিএনপি ক্ষমতায় আসতে এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিদায় হতে কূটনৈতিকদের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা রিয়াজ রহমান, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, কেন্দ্রীয় নেতা ফাহিমা মুন্নী, রুমিন ফারহানা, জেবা খান, মীর হেলাল, তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।
কূটনৈতিকদের মধ্যে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মান, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অট্রেলিয়া, কুয়েত, স্পেন, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও ডেপুটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।