আমাদের পৃথিবীর মতোই আরেকটি পৃথিবী আছে ‘কাছেপিঠেই’। বার্নার্ড’স নামের একটি তারকাকে কেন্দ্র করে ঘোরা এই ‘সুপার আর্থ’ সম্পর্কে গত বুধবার প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণা নিবন্ধ।
গবেষকরা বলছেন, পৃথিবী থেকে সূর্যের যে দূরত্ব, সে তুলনায় বার্নার্ড’স স্টার বি তার তারকা বার্নার্ড’স থেকে অনেক কাছে অবস্থিত। তবে আমাদের পৃথিবী সূর্য থেকে যে শক্তি পায় বার্নার্ড’স স্টার বি পায় তার মাত্র দুই শতাংশ। এ কারণেই গ্রহটির তাপমাত্রা খুবই কম।
সেখানে দাবি করা হয়েছে, সূর্যের দ্বিতীয় নিকটতম তারকাটির একটি গ্রহের সন্ধান মিলেছে। সেটি আকারে ও স্বভাবে অনেকটাই পৃথিবীর মতো। গ্রহটির এক বছর হয় ২৩৩ দিনে। অর্থাৎ বার্নার্ড’স স্টার বি নামে গ্রহটি তার তারকার চারপাশে একবার ঘুরতে ২৩৩ দিন সময় নেয়।
লাল রঙের এই বামনাকৃতি গ্রহটির আকার ও ওজন পৃথিবীর প্রায় তিনগুণ বেশি। অর্থাৎ গ্রহটি পৃথিবীর চাইতে আকারে যেমন তিনগুণ বেশি তেমনি ওজনের ক্ষেত্রেও সেটি। আকার ও ওজনের হারের এই তফাৎ গ্রহ দুটির ভরের সাদৃশ্য প্রকাশ করে বলে দাবি গবেষকদের।
গবেষকরা বলছেন, সৌরজগতের নিকটতম তারকামণ্ডল প্রক্সিমা সেন্টরাই থেকে অল্প কিছু দূরে অবস্থিত সেটি। সেখান থেকে মাত্র দুই আলোক বর্ষ দূরে আর আমাদের সৌরজগৎ থেকে মাত্র ছয় আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই নতুন সুপার আর্থ।
নতুন সুপার আর্থ নিয়ে গবেষকরা বেশ উত্তেজিত হলেও সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব যে অসম্ভব তা মেনে নিয়েছেন গবেষকরা। ক্যাটালোনিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্পেস স্টাডিসের গবেষক ইগনাস রিবাস জানিয়েছেন, সুপার আর্থের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ২৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে পানি ও গ্যাস সবই এখানে ঘনীভূত অবস্থায় রয়েছে।
এলএইচএস ১১৪০ বি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে প্রায় দেড়গুণ ব্যাস এবং সাড়ে ছয়গুণ ভর আছে। আর এর উপরের বায়ুমণ্ডল নিয়ে গবেষণায় এটা দেখা গেছে এতে তরল, কঠিন এবং বায়বীয় তিন অবস্থাতেই পানি থাকতে পারে। তাছাড়া পৃথিবীর মতো চৌম্বকীয় ক্ষেত্র আছে। এ কারণে গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর বাইরে যদি প্রাণের অস্তিত্ব কোনো গ্রহে থাকে তবে অবশ্যই সেটা এলএইচএস ১১৪০বি সুপার আর্থ। বার্নার্ড’স স্টার বি নয়।
প্রসঙ্গত, সৌরজগতের বাইরে যেসব গ্রহ তারকার চারপাশে পৃথিবীর মতোই ঘোরে সেগুলোকে বলা হয় এক্সোপ্ল্যানেট। নতুন গ্রহটি এমনই একটি এক্সোপ্ল্যানেট। একে বলা হচ্ছে নতুন সুপার আর্থ। গত বছরও এমন একটি সুপার আর্থ খুঁজে পেয়েছিলেন গবেষকরা। এলএইচএস ১১৪০ বি নামের সেই সুপার আর্থটি পৃথিবী থেকে ৩৯ আলোকবর্ষ দূরে। সেটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার বিষয়ে বেশি আশাবাদী গবেষকরা।
এক বস্তি আছে যেখানে এক রাত কাটাতে লাগবে
আপনার ২ হাজার টাকা
শুনতে অবাক লাগলেও এবার ভারতীয় পর্যটনের তালিকায় জুড়েছে দারিদ্র্য। চাইলে কিছু টাকার বিনিময়ে বস্তির ঘরে কাটিয়ে আসা যাবে এক রাত। খাবারের বন্দোবস্ত করে দেবেন ওই ঘরের মালিকই!
দারিদ্র্য আর তার থেকে জন্ম নেওয়া হাজার একটা অসুবিধার সাথে লড়াই করে কীভাবে টিকে থাকে বস্তিবাসী ভারত, সেটা আমাদের খুব একটা অজানা নয়। ছবি, ছায়াছবি, তথ্যচিত্র তো আছেই সেই পরিচিতির জন্য। এছাড়া যাওয়া-আসার মাঝেও শহরের বস্তিজীবনের কয়েক ঝলক চোখে পড়ে সবারই। কিন্তু যেচে টাকা দিয়ে সেখানে থাকতে যাওয়া?
সম্প্রতি মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে ডেভিড বিল নামের এক ওলন্দাজের হাত ধরে। বস্তিজীবন নিয়ে কাজ করে- মুম্বাইয়ের এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে তিনি অনেক দিন ধরেই যুক্ত।
‘লোকে যে বস্তিতে ঘুরতে আসে না, তা নয়। কিন্তু তা আর কতটুকু সময়ের জন্য? গাইডের সাথে দল বেঁধে পর্যটকরা আসেন, বিশেষ দু-একটা অলিগলি ঘুরে দেখেন, তারপর ফেসবুকে দেওয়ার জন্য কিছু ছবি তুলে নিয়ে চলে যান। তাতে বস্তির মানুষগুলোরও কোনো উপকার হয় না, পর্যটকরাও বস্তিজীবনের সংগ্রামের দিকটা বুঝতে পারেন না, জানিয়েছেন বিল।
সেই জন্যই এবার রবি সানসি নামের এক ধারাভি-বাসী এবং বলের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই অভিনব পর্যটন উদ্যোগ। ২০০০ টাকা দিলে খাওয়া-দাওয়া সমেত রবির ঘরে এক রাত কাটাতে পারবেন পর্যটকরা। তার জন্য ঘরের উপরে একটা শক্তপোক্ত মাচাও তৈরি করেছেন রবি। সেখানে রয়েছে এসি মেশিন, কালার টিভি আর নতুন তোষকও। ‘ইতিমধ্যেই এই পর্যটন দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে। বিদেশ থেকে প্রচুর মানুষ যেমন থাকতে আসছেন, তেমনই বস্তির অনেক লোকও নিজেদের ঘরে এরকম পর্যটকদের থাকার বন্দোবস্ত করার জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করছে, জানিয়েছেন বিল।
তবে, বিল যা-ই বলুন না কেন, তার এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ সাধুবাদ পাচ্ছে না বিশ্বদরবারে। বিশেষ করে যেখানে প্রথম বিশ্বে তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র্য চড়া দামে বিক্রি হয়, সেখানে তার এই উদ্যোগ নেতিবাচক বলেই মনে করছেন অনেকে।
‘পুরো ব্যাপারটাই অত্যন্ত বোকা বোকা! বিশেষ করে মাত্র এক রাত কাটানোর ব্যাপারটা! উনি দাবি করছেন, যে কয়েক ঘণ্টার ট্যুরে বস্তিজীবন