সচিবালয় প্রতিবেদক: বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্যজানান।
এর আগে প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত সভায় এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শ্রম আইন অনুযায়ী খাবার ও বিশ্রামের সময় বাদে টানা ১০ ঘণ্টার বেশি কোনোশ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যপদ হ্রাস করা হয়েছে। এতদিন ৩০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থন না
পেলে ট্রেড ইউনিয়ন করা যেত না। সংশোধিত আইন অনুযায়ী এখন ২০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থন মিললে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা যাবে।বেসামরিক বিমান পরিবহনে নিয়োজিত পাইলট, প্রকৌশলী ও কেবিন ক্রুরা স্বীকৃতি স্ব স্ব আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে
সমন্ধীকরণের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধনের আবেদন পাওয়ার ৫৫ দিনের মধ্যে সরকারকে নিবন্ধন দিতে হবে। আগে এ সময় ছিল ৬০ দিন। আবেদন প্রত্যাখ্যান হলে ৩০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে আপিল করা যাবে।
সচিব বলেন, শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা এবং উৎপানশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ২০০৬ সালের শ্রম আইন করে সরকার। ২০১৩ সালে আইনটির ব্যাপক সংশোধন করা হয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) চাহিদা অনুযায়ী শ্রমবান্ধব নীতি সব জায়গায় কার্যকর করতে শ্রম আইন সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধিত আইনে কারখানার শ্রমিকদের উৎসব ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নারী শ্রমিক প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাসহ প্রসবের পরে আট সপ্তাহ পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই ছুটি তার মূল ছুটি থেকে কাটা যাবে না।’ তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে মালিক ও শ্রমিকদের অসদাচরণ বা বিধান লঙ্ঘণের জন্য শাস্তি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। আগে শাস্তি ছিল ২ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
শফিউল আলম বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক শব্দটি শ্রম আইন থেকে বাদ দিয়ে সেখানে ‘কিশোর’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে। আগে ১২ বছর বয়সী শিশুরা কারখানায় হালকা কাজের সুযোগ পেত। সংশোধিত আইন অনুযায়ী ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোররা হালকা কাজ করতে পারবে।
কোনো শ্রমিককে উৎসব ছুটির দিনে কাজ করতে বলা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এজন্য তাকে একদিনের বিকল্প ছুটি এবং দুইদিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি দিতে হবে। সচিব বলেন, সংশোধিত আইন অনুযায়ী, শ্রমিকরা কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে ১লাখ টাকার পরিবর্তে ২ লাখ টাকা পাবেন। আর স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে সোয়া ১লাখ টাকা পরিবর্তে ২ লাখ ৫০ টাকা পাবেন।