ডেপুটি ম্যানেজার কাইয়ুমের বিরুদ্ধে পিকেএসএফ’র তদন্ত কমিটি গঠন

0
71

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমাদেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনে মোহাম্মদ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ৬৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ১০ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেছেন ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী।

তদন্ত কমিটি গঠন বিষয়ে পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নমিতা হালদারকে ফোন দিলে তিনি তার উত্তর দেননি। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে দৈনিক আমাদের বাংলা পত্রিকায় ‘পিএকএসএফ’র ডেপুটি ম্যানেজার কাইয়ুমের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ’ শীর্ষক সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় পিকেএসএফ।

এদিকে, মোহাম্মদ কাইয়ুমকে ফোন দিলে তিনিও প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে চলতে মাসের ২ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবসায়ী ইকবাল হোসন। তিনি তাঁর লিখিত আবেদনে দুদককে জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যম জানতে পারলাম যে, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)র ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে প্রায় ৬৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে সরকারি ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং কোন অর্থ লগ্নি না করেও বেশ কয়েকটি গ্রুপ অব কোম্পানির শেয়ার ও ব্যবসার নামে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. পিকেএসএফের ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুম সুলতানা গার্ডেন, আগারগাঁওয়ে ১২৫০ বর্গফুটের ১টি ফ্লাট, ২০৫০ বর্গফুটের ১টি ফ্লাট, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ শতক জমিতে ৬ তলা বিল্ডিং (১টি), ৭ শতক জমিতে দুই তলা বিল্ডিং (১টি), বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বন্টক -এন, প্লট -২৫০৩ এবং কেরানীগঞ্জে ৩৩ শতক জমির মালিক। সব মিলিয়ে তার সম্পত্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ৬৪ কোটি টাকা। অথচ স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের একজন ডেপুটি ম্যানেজারের মাসিক বেতন কত তা আপনাদের সকলেই অবহিত আছেন। সেই বেতনে কত টাকার সম্পদ করা বৈধ- তার সম্পদের সাথে আয়ের কোন সামঞ্জস্য নেই। বৈধ কোন নথি তিনি দেখাতে পারবেন না। আর এই সম্পদের ২০২২ সালের। এর মধ্যে কেটে গেছে আরও ২ বছর। এখন তাঁর মূল সম্পদের হিসেব কত তা দুদক জানতে চাইতে পারে।
২. ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে কোন টাকা না দিয়ে ন্যাশনাল ড্রাগস কোম্পানী লিমিটেড ক্রয় করেন। বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যাংক লোন পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় ন্যাশনাল ড্রাগ কোম্পানী লিমিটেডের বিভিন্ন পদে ছিলেন মো. খোরশেদ আলম, আসাদ উল্লাহ বখতিয়ার, মোহাম্মদ কাইয়ুম, আলী আহমেদ, ইসমাইল হোসেন, মো. মহিউদ্দিন, তারিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, মোরশেদ আলম, ডা. বিল্লাল হোসেন, নওয়াজেস রনি সহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি নিয়ে কোম্পানী আইনে মামলা দায়ের করে, যার নাম্বার হলো ২০৬/২০২৩। এই মামলাটি গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে রিজেক্ট করে দেন বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী।

৩. গরীব ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে হোটেল ব্যবসার নামেও বিভিন্ন জনের সাথে সরাসরি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত পিকেএসএফের ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুম।
৪. পিকেএসএফের ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুম মাস্টার ফিড এগ্রোটিক লিমিটেডের ১০টি শেয়ার হোল্ড করেন। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
আবেদনে ইকবাল হোসেন জানান, পিকেএসএফের ডেপুটি ম্যানেজার মোহাম্মদ কাইয়ুমের এই সব অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যব¯’ গ্রহণ করুন। একই সাথে দেশ ও জনগণের সম্পদ ও সুনাম রক্ষায় আপনার প্রতিষ্ঠান সময়োপযোগী ভূমিকা রাখবে ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here