পাকিস্তানকে টাকা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সমাধানে আইসিসি!

0
4

আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কিভাবে হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) পাকিস্তানের দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত না নেয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আবার হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা আয়োজনে নারাজ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও চিন্তায় আইসিসি কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতার সূচি চূড়ান্ত করতে আগামকাল (শুক্রবার) ২৯ নভেম্বর বৈঠকে বসবেন আইসিসি বোর্ডের সদস্যরা।

আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পাকিস্তানে হওয়ার কথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনা হবে কী ভাবে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেট সম্পর্ক বন্ধ রয়েছে। কোনও বহু দলীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যও পাকিস্তানে যায় না ভারতীয় ক্রিকেট দল। গত বছর এশিয়া কাপের সময়ও রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের পাকিস্তানে পাঠায়নি বিসিসিআই। ভারতের ম্যাচগুলোসহ বেশ কিছু খেলা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়।

সে ভাবেই কি হবে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি? ভারতের ম্যাচগুলি কি অন্য কোনও দেশে হবে? না কি পুরো প্রতিযোগিতাই সরিয়ে দেয়া হবে পাকিস্তান থেকে? সব কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন আইসিসি কর্মকর্তারা। ভারত এবং পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজনের সম্ভাবনা অবশ্য নেই। আইসিসির এক কর্তা বলেছেন, ‘২৯ নভেম্বরের বৈঠকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি চূড়ান্ত করা হবে।’

বিসিসিআই চায় গত এশিয়া কাপের মতো আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও হোক হাইব্রিড মডেলে। পছন্দ হিসাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথা বলেছেন বিসিসিআই কর্মকর্তারা। ভারতের এই প্রস্তাব মানতে নারাজ পিসিবি। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে আইসিসির চেয়ারম্যান হবেন জয় শাহ। ২৯ নভেম্বরের বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন বিসিসিআই সচিব হিসেবে। তার সাথে থাকবেন বিসিসিআইয়ের আরো এক কর্মকর্তা।

পিসিবির চিফ মহসিন নকভি যুক্তি তুলে ধরেছেন, পাকিস্তান যদি ভারতে গিয়ে খেলতে পারে, তা হলে ভারত কেন পাকিস্তানে আসবে না? সাম্প্রতিক অতীতে দু’তিন বছরের হিসেব ধরলে ভারতীয় টেনিস টিম ডেভিস কাপ খেলার জন্য দু’বার পাক সফর করেছে। সে যুক্তি অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্ষেত্রে কাজ করছে না।

মহসিন যে কারণে বলছেন, ‘একতরফা কিছু হতে পারে না। যা হবে দু’তরফা। আমরা ভারতে গিয়ে খেলতে পারি আর ভারত আমাদের দেশে খেলতে আসবে না, সেটা হতে পারে না। পিসিবি চেয়ারম্যান হিসেবে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই দায়িত্ব পালনে কখনও বিচ্যুত হইনা। যে কারণে আইসিসির সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগে আছি। চেয়ারম্যানের সঙ্গে বার বার কথা হচ্ছে। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত খুব স্পষ্ট করে জানিয়েছি।’

আইসিসি সূত্রে খবর, হাইব্রিড মডেলে রাজি করানোর জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ পিসিবিকে প্রায় ৫৯১ কোটি রুপি দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের রাজি করানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ আইসিসি কর্তাদের। কারণ, গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপের সময় বাবর আজমদের ভারতে পাঠিয়েছিল পিসিবি।

১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম আইসিসির কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজক পাকিস্তান। করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির স্টেডিয়ামগুলির সংস্কারের কাজ শুরু করেছে পিসিবি। বিপুল বিনিয়োগ করেছে তারা। ২০২১ সালে পাকিস্তানকে প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছিল আইসিসি। এই প্রতিযোগিতায় ভারত দল না পাঠালে, ভবিষ্যতে ভারতেও কোনও প্রতিযোগিতায় দল না পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে পিসিবি। সব মিলিয়ে জটিল সমস্যার সমাধান করতে হবে আইসিসি কর্তাদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here