ভুয়া সাংবাদিক শাকিলের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড; অতিষ্ঠ মনোহরদীবাসী

0
50

অভিযুক্তের নাম কাজী শরিফুল ইসলাম ওরফে শাকিল। মামলা একাধিক, তারমধ্যে ধানমন্ডি থানার মামলা নং ৪, (২ সেপ্টেম্বর ২০১৫), মনোহরদী থানার মামলা নং ৯/৭৯ (১২ এপ্রিল ২০২০) এবং মনোহরদী থানার মামলা নং ৭/৭৬, (৮ আগস্ট ২০২২) উল্লেখযোগ্য। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, খিদিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আপন ভুঁইয়া জানান আওয়ামী লীগ আমলে আপনি তাকে সাদীর ভয় ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা নেন।। কিন্তু ৫ আগস্টের পরেও আপনি এই আপনের কাছে চাঁদা দাবী করেছেন এবং না পেয়ে ফেসবুকে নানাবিধ মিথ্যা অপপ্রচার চালানো, ফেসবুকে মনোহরদীর ইউএনওকে বদলীর হুমকি দেন। এরপর পর গত ২০ আগস্ট ফেসবুক লাইভে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি, স্থানীয় সাংবাদিকমহল ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে কঠোর ভাষায় হুমকি দেন। মনোহরদী কারিগরী কলেজের কমিটিতে থাকতে চেয়েছেন। সে ইচ্ছা পূরণ না হওয়ায় কুৎসা রটান এবং ইয়াবা ব্যবসায়ি হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আর এসব কারণে তাকে গত ১১ জুন দুপুরে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়া হয়।

এসব অভিযোগ নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে কৌশলে তিনি অন্য এক সাংবাদিকের ছবি প্রতিবেদককে পাঠিয়ে বিভ্রান্ত করেন এবং উল্টা তিনি আপন নামের কাউকে চেনেন না বলে দাবি করেন। নিজেকে পিআইবি থেকে পাশ করা সাংবাদিক বলে পরিচয় দেন। একই সাথে কারো কাছে তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ থাকলে মামলা করতে বলেই হোয়াটসঅ্যাপে নাম্বারটি ব্লক করে দেন।

এ বিষয়ে মনোহরদী উপজেলা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তারা কি ব্যবস্থা নেন দেখে তিনি মন্তব্য করতে পারবেন।

এর আগে প্রকাশ্যে ফেসবুকে মনোহরদীর ইউএনওকে বদলীর হুমকি দেন। গত ২০ আগস্ট এক ফেসবুক লাইভে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি, স্থানীয় সাংবাদিকমহল ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে কঠোর ভাষায় হুমকি দেন শাকিল। ফেসবুক লাইভে সাবেক শিল্পমন্ত্রীর প্রশংসা করে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ল্যাংটা করে ফেলার হুমকিও দেয় সাদী বাহিনীর এই নেতা শাকিল।

সূত্র জানায় গত ২০২৪ এর জাতীয় নির্বাচনে ঈগল প্রার্থী বীরু খান, দোলন খান, কনক চেয়ারম্যানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দফায় দফায় মামলা করায় এই শাকিল। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানান এই শাকিল ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ে মন্ত্রী পরিবারের ছত্রছায়ায় মনোহরদী ও বেলাবোতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করতো এবং চাহিদামতো সুবিধা আদায় করতো। ০৫ আগস্টের পর এসব করতে না পেরে সে প্রশাসনসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের চরিত্র হননের পথ বেছে নিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরদীর একজন সিনিয়র সাংবাদিক জানান এই শাকিলের কর্মকাণ্ডে আমরা লজ্জিত ও বিব্রত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ বিষয়ে প্রশাসন সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। শাকিল কোনো সাংবাদিক নয় এবং কোনো সাংবাদিক শাকিলের পক্ষ নেয় না তবুও কেন শাকিল জবাবদিহিতার আওতায় আসছে না?

এর মূল কারন নেপথ্যে কিছু ব্যক্তি শাকিলকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। এখনই যদি এই ভূয়া ও প্রতারক সাংবাদিক শাকিলের উপযুক্ত বিচার করা না হয় তবে ভবিষ্যতে মনোহরদীতে অপসাংবাদিকতা ছাড়া আর কিছুই হবে না। স্থানীয় কলেজের একজন প্রভাষক জানান তার নামে শাকিল ফেসবুকে বিভিন্ন অপমানজনক পোস্ট দিয়ে দিনের পর দিন টাকা নিয়েছে এরকটা মনোহরদীর অনেক নিরীহ শিক্ষকের সাথে প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে শাকিল। খিদিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আপন ভুঁইয়া জানান আওয়ামী লীগ আমলে এই শাকিল আমর কাছ থেকে সাদীর ভয় ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা নেয়।। কিন্তু আমি হতবাক হয়ে যাই ৫ আগস্টের পরেও সে আমার কাছে চাঁদা দাবী করেছে না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে নানাবিধ মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপন ভুঁইয়া তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সম্প্রতি মনোহরদীর ইউএনওর বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় কাজী শরীফুল ইসলাম শাকিল। তার অন্যায় আবদার না রাখায় আগের ইউএনওর বিরুদ্ধেও ওই জনৈক শাকিল লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছিলো। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই শাকিল মনোহরদীতে এক ঘৃনিত নাম। মনোহরদীর স্থানীয় অন্যান্য সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানা যায় এই কাজী শরীফুল শাকিল মূলত পতিত সরকারের সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন ও তার ছেলে সাদীর প্রত্যক্ষ ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলো।সরকার পতনের পর শাকিল ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করার চেষ্টা করে। আশানুরুপ সাড়া না পেয়ে শাকিল নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে সর্বমহলে খবরদারী করা শুরু করে।

অভিযোগ আছে যে, মনোহরদীর ইউএনও, ওসি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সরকারী কর্মকর্তাদের উপর অন্যায় আবদার ও চাঁদা দাবি করে আসছে। নিজের ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজনকে আক্রমন করে স্ট্যাটাস দিয়ে অর্থ আদায় করে এই শাকিল। তার সাথে কারো মতের মিল হলে ফেসবুকে এলাকার শ্রেষ্ঠ মানুষ বলে স্ট্যাটাস দেয় আবার কিছুদিন পর তার চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারলে ফেসবুকেই বিভিন্ন কুৎসা রটনা করা হলো শাকিল এর প্রধান কৌশল।

সম্প্রতি মনোহরদীতে দালাল-প্রতারক ও আওয়ামী লীগের দোসর কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলকে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও অসন্তোষ রূপ নেয় গণপ্রতিরোধে, যেখানে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগে প্রতিহত করা হয় এই ইয়াবা ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও ছদ্মবেশী সাংবাদিক পরিচয়ধারী এই শরিফুল ইসলাম শাকিলকে। গত ১১ জুন দুপুরে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়।

সূত্র জানায়, মনোহরদী কারিগরী কলেজের কমিটিতে থাকতে চেয়েছিলেন এই শাকিল। ব্যর্থ হয়ে ক্ষুব্দ শাকিল কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি ইউএনওর উপর চড়াও হন। সেই থেকে ইউএনও ও অধ্যক্ষকে দেখে নেবেন বলে চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দেয় শাকিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরদী কারিগরী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, শাকিল কমিটিতে থাকতে না পেরে কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছে।

এমনিভাবে সকল ক্ষেত্রে শাকিল আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে তাকেঁ মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারের হুমকি ও ফেসবুকে নামে বেনামে আইডি খুলে অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিকভাবে অপদস্ত করে থাকে।

এই শাকিল মাধবদীতে জুলাই অন্দোলনের সময়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কিন্তু সে মামলার পরও তার চাঁদাবাজি অব্যাহত রাখে। ইয়াবা ব্যবসায়ি হিসেবে এর আগে শাকিল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। পরে সাবেক শিল্পমন্ত্রী হস্তক্ষেপে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। দান করার কথা বলেও টাকা হাতিয়ে নিতো প্রবাসী লোকজনের কাছ থেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিত। সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে সে চাচা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অফিস আদালত চষে বেড়াতো। এসব অফিসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার পাশাপাশি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। বিভিন্ন সময়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রীর ভাতিজা হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতর থেকে বিভিন্ন লোকজনকে শিল্প কারখানাসহ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন করিয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা।

এছাড়াও সাবেক শিল্পমন্ত্রীর ছেলে সাদীর ডান হাত নামেও পরিচয় ছিলো এই শাকিলের। বিতর্কিত সাদীকে যেখানে মনোহরদী-বেলাবর মানুষ প্রতিহত করার চেষ্টা করতো কিন্তু সেই সময় এই শাকিলই সাদীকে মানবতার ভাইজান হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাতো।

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি এবং প্রতারণা করে আসছিল। সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের প্রথমে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।না পেলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায় এবং তার পেছনে লাগে। সবশেষে নিজের ফেসবুকে বিভন্নি মানুষ সম্পর্কে কুৎসিত ও কুরুচিপূর্ণ প্রচারণা চালায়। অবিলম্বে এই প্রতারক শাকিলের গ্রেফতার দাবি করে। মনোহরদীবাসী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here