ঢাকা ক্রিকেট কমিটি অব মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) প্রথম বিভাগের ২০টি ক্লাবকে দল বদল ও লিগের তারিখ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে রোববার। আগামী ৫ ও ৬ নভেম্বর দলবদল, লিগ শুরু ১৮ নভেম্বর। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দলবদল হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। প্রথম বিভাগ লিগ ২০২৪-২৫ মৌসুমের খেলা হয়েছে ২৭ জানুয়ারি থেকে ৩ মার্চ।
সাত মাসের ব্যবধানে ২০২৫-২৬ লিগ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২৩ অক্টোবর প্রথম বিভাগের ১৬টি ক্লাবের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সভা করে সিসিডিএম। সে সভায় বেশ কয়েকটি ক্লাব একই বছর দুটি লিগ খেলার ব্যাপারে আপত্তি জানায়। ফলে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়েছিল বলে জানান আম্বার স্পোর্টিং ক্লাবের প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান তপু। ক্লাব প্রতিনিধিদের বলা হয়েছিল বোর্ডে সিদ্ধান্ত নিয়ে দলবদল ও লিগের তারিখ চিঠি দিয়ে জানানো হবে। সে মোতাবেক ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিসিবি।
সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন নির্ধারিত সময়ে লিগ আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলবদল ও লিগের তারিখ ঘোষণা করেছি। আশা করি, ২০টি ক্লাব নির্ধারিত সময়ে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লিগে খেলবে। যে সময় দেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই পেছানো হবে না।’
আট বছর ধরে তৃতীয় বিভাগ দিয়ে ঢাকা লিগের মৌসুম শুরু হয়। হঠাৎ করে কেন নিয়মের পরিবর্তন– জানতে চাওয়া হলে দীপন বলেন, ‘প্রিমিয়ার ডিভিশন দিয়ে লিগ শুরু করা গেলে ভালো হতো। জাতীয় দলের খেলা ও বিপিএলের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে প্রথম বিভাগ আগে শুরু করছি। ওপর থেকে লিগ শুরু করার ভালো দিক হলো, কেউ প্রথম বিভাগে দল না পেলে দ্বিতীয় বিভাগ খেলতে পারবে। দ্বিতীয় বিভাগে দল না পেলে তৃতীয় বিভাগ খেলবে। নিচে থেকে শুরু করা হলে এই সুযোগ থাকে না।’
ক্লাব কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, সিসিডিএম চেয়ারম্যান দীপন যেটা বলছেন, বিষয়টি তেমন নয়। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের হাতে প্রথম বিভাগের ক্লাব বেশি। এ কারণে তারা প্রথম বিভাগ দিয়ে লিগ শুরু করতে চায়। সবকিছু স্বাভাবিক দেখাতে চায়। তারা যেভাবে চিন্তা করছে, বিষয়টি অত সহজ নাও হতে পারে। আমরা ৪৮টি ক্লাব সর্বসম্মতিতে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেব এই বোর্ডের অধীনে কোনো লিগ বা খেলায় অংশগ্রহণ করব না।’
নির্বাচনের আগে ক্লাবগুলোকে একাট্টা হতে দেখা গেলেও এবার ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন লিগে খেলার পক্ষে। তিনি রাজশাহী থেকে ফোনে বলেন, ‘একজন সাবেক অধিনায়ক হিসেবে আমি লিগে খেলার পক্ষে। আমি তিনটি ক্লাবের সভাপতি (ওল্ড ডিওএইচএস, শাইনপুকুর ও উত্তরা ক্লাব)। এই তিনটি ক্লাবই লিগে খেলবে। নির্বাচন নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, তাই বলে খেলা বন্ধ করে ক্রিকেট বা ক্রিকেটারদের ক্ষতি করার পক্ষ সমর্থন দিতে পারি না। এই লিগ না হলে ক্রিকেটাররা মাঠে নামবে, মারামারি হবে, তখন পরিস্থিতি কে সামাল দেবে? প্রথম বিভাগ লিগ খেলে এক দুই লাখ টাকা পায় একজন ক্রিকেটার। লিগ না হলে কোথায় যাবে তারা। ঢাকা লিগ না হলে ক্রিকেট মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। একজন ক্রিকেটার ও অধিনায়ক হিসেবে আমি এটা মেনে নিতে পারব না।’
জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালও লিগে খেলার পক্ষে। ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ মিঠুন খুলনা থেকে ফোনে বলেন, ‘মাঠে খেলা থাকলেই আমরা খুশি। লিগ মাঠে গড়ালে, ক্রিকেটাররা খেলতে পারলে কোনো সমস্যা নেই।’ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো যেভাবে একাট্টা হয়েছে, তাতে করে জাতীয় নির্বাচনের আগে লিগের খেলা শুরু নাও হতে পারে।
 
		