মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে দলের কার্যালয়ে বেগম জিয়ার উপদেষ্টাদের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ৭৩ জন উপদেষ্টার মধ্যে ৪০ জন বৈঠকে অংশ নেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার প্রমুখ। সিনিয়র নেতারা উপদেষ্টাদের বক্তব্য নোট করেন, যা দলের হাইকমান্ডকে দেয়া হবে। গত সোমবার স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যানদের বৈঠকে খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে না যেতে পরামর্শ দেন তারা।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে না যেতে পরামর্শ দিয়েছেন তার উপদেষ্টারা। তারা বলেছেন, আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি তারপর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে গেলে খালেদা জিয়াকে নিয়েই যেতে হবে, তাকে ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। আগে বেগম জিয়ার মুক্তি, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বৃহত্তর ঐক্য গঠনে জোর দিতে হবে। ঘনঘন কর্মসূচি না দিয়ে সময় নিয়ে হলেও একত্রে সরকার পতনে এক দফা কর্মসূচিতে যেতে হবে। ছাড় দিয়ে হলেও ঐক্য গঠন করতে হবে, বেগম জিয়া যে ঐক্য গঠনের কথা বলেছেন তা রক্ষা করতে হবে। উপদেষ্টারা সরকার পতনে এক দফা আন্দোলনের তাগিদ দেন।
খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বৈঠকসূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টারা মনে করেন সরকার আপসে তাদের কোনো দাবি মেনে নেবে না। এজন্য তাদের শক্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতেও পরামর্শ দেন তারা। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে যেভাবে মামলা দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে নিন্দা জ্ঞাপন এবং খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ঐক্যটা যাতে হয়, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চেষ্টা করা- এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী বলেন, আমাদের বৈঠকে তিনটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে- বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, জোটবদ্ধ আন্দোলন এবং নির্বাচন। ম্যাডামের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আন্দোলন বেগবান করার জন্য সবাই একমত পোষণ করেছেন। বিএনপির বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে সবাই আশাবাদী, ঐক্য আন্দোলন হবে।
বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মান উল্লাহ আমান, আব্দুল হাই সিকদার, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, খোন্দকার গোলাম আকবর, মনিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক তাজমেরি এস ইসলাম, ভিপি জয়নাল, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, কর্নেল (অব.) আব্দুল লতিফ গাজী মাযহারুল আনোয়ার প্রমুখ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ছাড়ের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত এসেছে। দেশে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিকে বিকিয়ে তো কিছু করা যাবে না, তবে মির্জা ফখরুল শক্ত অবস্থানে থাকার কথা বলেছেন।