শেষ সময়ে হরিলুট চালাচ্ছে ইউনূস বাহিনী

0
15

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন‍্য ১০১ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ৬০টি পাজেরো গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এটিকে হরিলুট হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। এ নিয়ে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, যে সরকার গেছে তারাতো গাড়ি নিয়ে যায়নি। আর এমন গাড়ি কিনতে পারলেই কমিশন পাওয়া যায়। তাই তাড়াহুড়ো করে গাড়ি কেনা হচ্ছে। যারা মন্ত্রী হবে তাদের গাড়ি লাগবে কি লাগবে না এটি তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়া যেত।

এদিকে এই গাড়ি কেনার প্রস্তাবে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সরকারের কিংস পার্টি এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন। নিজের ফেসবুক পোস্টে তাজনুভা লেখেন, ‘আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন‍্য ১০১ কোটির মূল্যের ৬০টি পাজেরো গাড়ির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মানে অর্থ উপদেষ্টা কতটা কেয়ারিং আর কৃতজ্ঞ বন্ধুর প্রতি, বন্ধু মন্ত্রী হওয়ার সাথে সাথেই যাতে নতুন গাড়িতে চড়তে পারেন, আগাম ব‍্যবস্থা।’

জানা গেছে, আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের জন্য কেনা হচ্ছে ১৯৫টি পাজেরোসহ মোট ২২০টি গাড়ি। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।

দেশের এ পরিস্থিতিতে সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যখন জনগণের আস্থা চরমভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো এক সতর্কবার্তায় সম্ভাব্য সাইবার হামলার শঙ্কা প্রকাশিত হয়।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই হঠাৎ সাইবার হুমকির বার্তা নিছক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নয় বরং রাষ্ট্রীয় ব্যাংক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করার পূর্বপ্রস্তুতি। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে, গত জুলাই মাসজুড়ে ইউনুসপন্থী বেশ কিছু অনলাইন পেমেন্ট চ্যানেলে অস্বাভাবিক অঙ্কের লেনদেন শনাক্ত হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং আইনের পরিপন্থী। অর্থ পাচারচক্রের আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং দেশে থাকা ভেতরের দালালদের সহযোগিতায় একটি সুপরিকল্পিত চক্র রাষ্ট্রীয় অর্থভাণ্ডার ফাঁকা করতে সক্রিয়। ৩০ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি বিভাগ থেকে পাঠানো ওই অফিসিয়াল চিঠিতে বড় ধরনের সাইবার হামলার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। যদিও এটিকে সাধারণ সতর্কতা বলা হলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই হুঁশিয়ারি আসলেই ভবিষ্যতের কোনো হুমকি রুখতে দেওয়া হয়েছে, না কি অর্থচুরির ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই সময় জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংকিং ও ডিজিটাল পেমেন্ট সেক্টরের সব ধরনের লেনদেন ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার খতিয়ে দেখার। প্রয়োজনে বিশেষ তদন্ত কমিটি বা টাস্কফোর্স গঠন করে চক্রটির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এক সেমিনারে বলেন, “সরকারের সময় শেষের পথে। এখন এক্সিট পলিসি ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ দরকার।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান পদক্ষেপগুলো পরবর্তী সরকার কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নির্ভর করবে এখনকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ওপর।”

শেষ পর্যন্ত সরকারে এমন কর্মকাণ্ডের প্রভাব রাষ্ট্রীয় অর্থব্যবস্থার ওপর কতটা ভয়াবহ হবে—তা সময়ই বলবে। তবে এখনই যদি সত্য উন্মোচন না হয়, তাহলে দেশের স্বাধীনতা ও আর্থিক নিরাপত্তা ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here