এখনো পর্যন্ত দুই ওপেনিং বোলার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আর আবু হায়দারই জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে যা একটু সমীহ আদায় করে নিতে পেরেছেন। দুজনেই নিয়েছেন একটি করে উইকেট। এই দুইয়ের বোলিংয়েই দলীয় ৬ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসেছিল জিম্বাবুয়ে। সাইফ এখনো পর্যন্ত ৫ ওভার বল করে ১৪ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন। আবু হায়দারের ৭ ওভার থেকে এক উইকেটসহ রান এসেছে ২৬ রান। মাশরাফিও খারাপ বল করেননি। নাজমুল অপু এক উইকেট পেলেও ৫ ওভারে দিয়েছেন ৪৪। মাহমুদইল্লাহ দিয়েছেন ৮ ওভারে ৩৩। সৌম্যর ২ ওভার থেকে জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানরা তুলে নিয়েছেন ১৬ রান।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে খরচে নাজমুল। ৮ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। সাইফউদ্দিন ৮ ওভারে ৩৫ রানে ১ উইকেট । আর আবু হায়দার ৮ ওভারে ৩৬ রানে নিয়েছেন একটি। এ ছাড়া মাশরাফি ব্যবহার করেছেন আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্যকে। এরা যথাক্রমে দিয়েছেন ৩ ওভারে ১৭, ১০ ওভারে ৪০ আর ২ ওভারে ১৬। মাশরাফি নিজে ৮ ওভারে দিয়েছেন ৫৬ রান।
লড়ে যাচ্ছেন শন উইলিয়ামসন। হককত রানে থামবে জিম্বাবুয়ে। চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এখন এই প্রশ্ন। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন শন উইলিয়ামস। এই প্রতিবেদন লেখার সময় জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৪৬ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৪। মাত্র ৬ রানে ২ উইকেট পড়ার পর ব্রেন্ডন টেলর আর উইলিয়ামসের ১৩২ রানের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। সফরে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে চাপটা পুরোপুরি চলে আসে বাংলাদেশের ওপর। চট্টগ্রামের এই মাঠে টেলর আর উইলিয়ামসের এই জুটি তৃতীয় উইকেট জুটিতে রেকর্ড। টেলর মারে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কা।
চমৎকার সেই জুটি ভাঙেন নাজমুল অপু। সপাটে চালাতে গিয়ে তাঁর বলে টপ এজ করেন টেলর। বল উঠে যায় সোজা আকাশে। পেছন থেকে এসে টেলরের ক্যাচটি ধরতে খুব বেশি কষ্ট হয়নি উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের। তৃতীয় উইকেট জুটির পর উইলিয়ামসের সঙ্গে সিকান্দার রাজা গড়েন ৮৪ রানের আরও একটি ভালো জুটি। ৯৩ বলে ৮৪ রানের এই জুটি বড় সংগ্রহের পথে জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে দেয় অনেকটাই। রাজাকে ফেরান নাজমুলই। ফুলটস বলে স্লগশট খেলতে গিয়ে লং অনে সৌম্যকে ক্যাচ দেন তিনি। রাজার ব্যাট আসে ৪০ রান।
রাজা ফেরার পর পিটার মুর যেন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন। এই মুহূর্তে ১৩ বলে ২১ রান করে অপরাজিত তিনি। উইলিয়ামস ১৩১ বলে ১১৫ রানে অপরাজিত। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৯টি চার ও একটি ছয়ের মার। মুর মেরেছেন ২টি ছক্কা। তাঁর দুটি ছক্কাই অধিনায়ক মাশরাফিকে মারা।
১৩২ রানের জুটি গড়েছিলেন ব্রেন্ডন টেলর ও শন উইলিয়ামস। ছবি: শামসুল হক
তিনশ রানের ইনিংস গড়তে দারুণ অবস্থানেই আছে তারা। এখন প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের বোলাররা জিম্বাবুয়েকে সেই লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে পারে কিনা।
শুরুতেই আঘাত হেনেছিলেন সাইফউদ্দিন। ছবি: শামসুল হক
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), আবু হায়দার রনি ও নাজমুল ইসলাম অপু।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), সিফাস জুওয়াও, এল্টন চিগুম্বুরা, ব্রেন্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), শন উইলিয়ামস, পিটার মুর, সিকান্দার রাজা, ডোনাল্ড তিরিপানো, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জার্ভিস ও রিচার্ড এনগারাভা।
এ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে এসেছে তিন পরিবর্তন। অভিষেক দুই ম্যাচে গোল্ডেন ডাক মারা ফজলে মাহমুদ রাব্বির জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন ইনফর্ম সৌম্য সরকার।
পরীক্ষিত মেহেদী হাসান মিরাজকে রেস্টে রাখা হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আরিফুল হক। এর মধ্য দিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটলো এ পেস অলরাউন্ডারের। বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানকে। তার স্থানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন আবু হায়দার রনি।
গত ম্যাচের সময়ই খুলনা থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে সৌম্য সরকার। তিনি আজ খেলছেন। তাঁকে জায়গা দিতে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে ফজলে রাব্বিকে। অভিষেকে শন্য রানে ফেরার পর গত ম্যাচেও তিনি শূন্য মেরেছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট হয়তো তাঁকে আপাতত আর সুযোগ দিতে চাচ্ছেন না।
মোস্তাফিজুর রহমানকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। তাঁর জায়গায় খেলবেন আবু হায়দার। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে বসিয়ে মাঠে নামানো হচ্ছে ব্যাটসম্যান আরিফুল হককে।







