২৮৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এই মুহূর্তে সৌম্য আর ইমরুলের ব্যাটে খুঁজে পেয়েছে নির্ভরতা।
কী দুর্দান্ত ব্যাটিংটাই না করছেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। জিম্বাবুয়ের ২৮৬ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই কাইল জারভিসের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েছিলেন লিটন দাস। মুহূর্তেই মনে ‘কু’ ডাক শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের গ্যালারি ভর্তি করা দর্শকদের। না জানি কী দুঃখ আছে আজ কপালে! কিন্তু ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি বেঁধে সব শঙ্কা কিছুক্ষণের মধ্যেই পেছনে ফেললেন সৌম্য সরকার।
আজ যেন প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন সৌম্য সরকার। নিজেকে নতুন করে চেনানোর। ২০১৫ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর যে সৌম্যকে ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখেছেন, সেই সৌম্যকেই আজ দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পেয়ে গেছেন তিনি। এই প্রতিবেদন লেখার সময় সৌম্যর সংগ্রহ ৮৮ বলে ১১৬। বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৯ ওভারে ১ উইকেটে ২১৭। জুটি ওই ২১৭ রানেরই। এটি ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে সেরা জুটি। ইমরুল অপরাজিত ৮৫ বলে ৮৯ রান করে। সিরিজে তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি হবে কি!
ফর্মের তুঙ্গে থাকা ইমরুল বাংলাদেশের পক্ষে যেকানো দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড গড়েছেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর ছিল ৩৬৫। বাংলাদেশের পক্ষে যেকােনা টুর্নামেন্টে সেটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তামিমের সংগ্রহ ছিল ৩১২ রান।
সৌম্যর ৮৯ রানে বাউন্ডারি ৭টি, ছক্কা ৪টি। ইমরুলের ব্যাট থেকে এসেছেন ৯ চার এক ছক্কা।
লক্ষ্যমাত্রাটা যথেষ্ট কঠিন। ২৮৬ রানে টপকে যেতে শুরুটা হওয়া উচিত দুর্দান্ত। কিন্তু প্রথম বলেই কাইল জারভিসের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা লিটন দাস।
লিটন অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন। জারভিসের বলটাও লেগ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার মতোই ছিল। কিন্তু রিভিউতে ‘আম্পায়ার্স কল’ বলে যে ব্যাপারটা আছে, সেই সূত্র মেনেই প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটতে হয়েছে লিটনকে।
প্রথম বলেই ফিরেছেন লিটন।
লিটনের বিদায়ের পর উইকেটে এসেছেন সৌম্য সরকার। এশিয়া কাপের ফাইনালে করেছিলেন মূলবান ৩৩। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রথমে দলে ছিলেন না। গত শুক্রবার বিকেএসপির প্রস্তুতি সেঞ্চুরি করেই নির্বাচকদের মনোযোগ কাড়েন আবারও। চলমান জাতীয় লিগেও তাঁর ব্যাট হাসছিল দারুণভাবে। আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি সৌম্যর জন্য বড় চ্যালেঞ্জই। নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার সেই চ্যালেঞ্জ কিন্তু কঠিনই হবে। সে পথে জিতেছেন সৌম্য। সঙ্গে আছেন ইমরুলও। দলের জয়ের সঙ্গে এই দুজনের শতকও এখন চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশা।
এ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে এসেছে তিন পরিবর্তন। অভিষেক দুই ম্যাচে গোল্ডেন ডাক মারা ফজলে মাহমুদ রাব্বির জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন ইনফর্ম সৌম্য সরকার।
পরীক্ষিত মেহেদী হাসান মিরাজকে রেস্টে রাখা হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আরিফুল হক। এর মধ্য দিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটলো এ পেস অলরাউন্ডারের। বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানকে। তার স্থানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন আবু হায়দার রনি।
গত ম্যাচের সময়ই খুলনা থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে সৌম্য সরকার। তিনি আজ খেলছেন। তাঁকে জায়গা দিতে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে ফজলে রাব্বিকে। অভিষেকে শন্য রানে ফেরার পর গত ম্যাচেও তিনি শূন্য মেরেছিলেন। টিম ম্যানেজমেন্ট হয়তো তাঁকে আপাতত আর সুযোগ দিতে চাচ্ছেন না।
মোস্তাফিজুর রহমানকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। তাঁর জায়গায় খেলবেন আবু হায়দার। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে বসিয়ে মাঠে নামানো হচ্ছে ব্যাটসম্যান আরিফুল হককে।