সৌম্য-ইমরুলের ঝরে উড়ে গেলো জিম্বাবুয়ে

0
425

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,,,, জিম্বাবুয়ের সাথে তিন ম্যাচ সিরিজে 3-0 ব্যবধানে সিরিজ জিতে ।জিম্বাবুয়েকে বাংলা ওয়াশ করল বাংলার টাইগাররা। শেষ ম্যাচের স্কোর বোর্ড:জিম্বাবুয়ে ২৮৬/৫ (৫০ ওভার)

টেইলর ৭৫ রান (৭২ বলে)
শেন উইলিয়ামস ১২৯ রান( ১৪৩ বলে)
বাংলাদেশ ২৮৮/৩ (৪২.১ ওভার)

সৌম্য সরকার ১১৭ রান (৯২ বলে)

ইমরুল কায়েস ১১৫ রান (১১২ বলে)

ফলাফল:বাংলাদেশ 7 উইকেটে জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: সৌম্য সরকার (১১৭ রান 92 বলে)
আর ম্যান অফ দা সিরিজ: ইমরুল কায়েস(১৪৪+৯০+১১৫)=৩৪৯ রান

আজ যেন প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন সৌম্য সরকার। সেই সঙ্গে ইমরুল কায়েসও। সৌম্যর প্রতিজ্ঞা ছিল নিজেকে নতুন করে চেনানোর আর ইমরুল পণ করেছিলেন এই সিরিজে যে অসাধারণ ব্যাটিং তিনি করছেন, সেটি চালিয়ে যাওয়ার। ২৮৭ রানের লক্ষ্যমাত্রার সামনে ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে অসাধারণ কিছুরই প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা মিটিয়েছেন সৌম্য আর ইমরুল। দুজনই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২২০ রানের জুটি গড়ে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেটি পুরোপুরি হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছেন তাঁরা। এই প্রতিবেদন লেখার সময় জয়ই দেখছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। ৩৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৫৮। জয়ের জন্য আর ২৯ রান দরকার বাংলাদেশের।

কী দুর্দান্ত ব্যাটিংটাই না করছেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। জিম্বাবুয়ের ২৮৬ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই কাইল জারভিসের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েছিলেন লিটন দাস। মুহূর্তেই মনে ‘কু’ ডাক শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের  গ্যালারি ভর্তি করা দর্শকদের। না জানি কী দুঃখ আছে আজ কপালে! কিন্তু ইমরুল কায়েসের সঙ্গে জুটি বেঁধে সব শঙ্কা কিছুক্ষণের মধ্যেই পেছনে ফেললেন সৌম্য সরকার।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আবারও সেঞ্চুরি হাঁকালেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। তিন ম্যাচের মধ্যে দুটি সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এ ওপেনার। প্রথম ম্যাচে ঢাকায় সেঞ্চুরি (১৪৪) করেন তিনি। বুধবার চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ১০ রানের জন্য শতরান বঞ্চিত হন তিনি।

আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ খেলায় অনবদ্য সেঞ্চুরি করে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করার ভূমিকা পালন করেন তিনি।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৭৬তম ম্যাচে ক্যারিয়ারে এটি ইমরুলের চতুর্থ সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে তার ১৬টি ফিফটি রয়েছে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে পাশাপাশি টেস্টেও সফল কায়েস। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ৩৪ ম্যাচ খেলে তিনটি সেঞ্চুরি এবং ৪টি ফিফটির সাহায্যে ১ হাজার ৬৭৯ রান করেছেন ইমরুল।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডে দলের বাইরে থাকা সৌম্য শুক্রবার সিরিজের শেষ ম্যাচে দলে ফিরেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ৩৫তম ম্যাচে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে ৯২ বল খেলে ৯ চার ও ৬ ছক্কায় ১১৭ রান করেন সৌম্য।

একদিনের ক্রিকেটে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১০ বল খেলে ক্যারিয়ার সেরা ১২৭* রান করেন সৌম্য। ওয়ানডেতে ছয়টি ফিফটির পাশাপাশি তার দুটি সেঞ্চুরি রয়েছে। ওয়ানডের পাশাপাশি ১০টি টেস্টে ম্যাচ খেলে ৪টি ফিফটির সাহায্যে ৫৫৮ রান করেছেন সৌম্য।

দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন ইমরুল কায়েস। প্রথম ম্যাচে ঢাকায় সেঞ্চুরি (১৪৪) করা কায়েস, গত বুধবার চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ১০ রানের জন্য শতরান করতে পারেননি। ফেরেন ৯০ রান করে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে ইমরুলের ১৭টি ফিফটির পাশাপাশি ৩টি সেঞ্চুরি রয়েছে। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে ৩৪ ম্যাচ খেলে তিনটি সেঞ্চুরি এবং ৪টি ফিফটির সাহায্যে ১ হাজার ৬৭৯ রান করেছেন কায়েস।

এর আগেজিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার ম্যাচে ২৮৭ রানের টার্গেট ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে লিটন দাস। আগের ম্যাচেও দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিয়েছিলেন। তবে রিভিউ নিয়ে লাইফ পান তিনি। তবে এদিন আর সেই ভাগ্য কাজে আসেনি লিটনের।

আগের ম্যাচে ৮৩ রান করা বাংলাদেশ দলের এ ওপেনার শুক্রবার তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ফেরেন শূন্য রানে। কাইল জার্ভিসের বলে গোল্ডেন ডাক পান লিটন।

জিম্বাবুয়ে ২৮৬/৫

সূচনালগ্নেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে সফরকারীদের চেপে ধরেন লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সিফাস জুওয়াও ক্লিন বোল্ড করে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আরেক ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে ইনসাইড এজ করে প্যাভিলিয়নে পধ ধরান আবু হায়দার রনি।

৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। তবে পরক্ষণে প্রতিপক্ষের ওপর সেই চাপটা ধরে রাখতে পারেননি টাইগার বোলাররা। তারা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও দারুণ খেলেন ব্রেন্ডন টেইলর ও শন উইলিয়ামস। তাদের সোজা ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

একপর্যায়ে রীতিমতো চোখ রাঙাতে থাকেন এ জুটি। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। হার মানেন টেইলর। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৭২ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৫ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এটি তার ক্যারিয়ারের ৩৬তম ফিফটি। এ নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি হাঁকান তিনি। টেইলরের বিদায়ে ভাঙে ১৩২ রানের জুটি।

পরে উইলিয়ামসকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন সিকান্দার রাজা। মূলত এতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দুজনের জোটে দুরন্ত গতিতে ছুটে তারা। কিন্তু হঠাৎই হার মানেন রাজা। নাজমুল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৫১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রান করেন এ অলরাউন্ডার।

রাজা ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান উইলিয়ামস। টাইগার বোলারদের শাসাতে থাকেন তিনি। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২য় সেঞ্চুরি। তার ব্যাটে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় রোডেশিয়ানরা।

শেষদিকে তাকে সঙ্গ দেন পিটার মুর। ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন তিনি। ২১ বলে ২ ছক্কায় ২৮ রানের ক্যামিও খেলে ফেরেন মুর। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ২৮৬ রান করে লালচাঁদ রাজপুতের দল। উইলিয়ামস ১২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় এ হার না মানা ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ব্যাটার।

অপর প্রান্তে ১ রানে অপরাজিত থাকেন এল্টন চিগুম্বুরা। বাংলাদেশের হয়ে নাজমুল ইসলাম ২টি এবং সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার নেন ১টি করে উইকেট। প্রথম দুই ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ে ইতিমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছেন টাইগাররা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here